spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদসারা বাংলালক্ষ্মীপুরে নিষেধাজ্ঞা শেষে মেঘনায় জেলেদের হতাশা, মেলেনি কাঙ্ক্ষিত ইলিশ

লক্ষ্মীপুরে নিষেধাজ্ঞা শেষে মেঘনায় জেলেদের হতাশা, মেলেনি কাঙ্ক্ষিত ইলিশ

মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে মধ্যরাতে নদীতে নেমে পড়লেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরেছেন লক্ষ্মীপুরের জেলেরা।

গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সবধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকলেও, নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই আশায় বুক বেঁধে জাল-নৌকা নিয়ে নদীতে পাড়ি জমান জেলেরা। কিন্তু সারারাত জাল ফেলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলেনি, ফলে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন মাছঘাটে ফিরে আসে হতাশার চিত্র।

জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকারের নির্দেশনা মেনে নদীতে নামেননি তারা। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শেষে ভালো ইলিশ পাওয়ার আশা পূরণ হয়নি। সামান্য যে মাছ মিলেছে, তাতেও খরচ উঠছে না। ফলে ইঞ্জিন চালিত নৌকার জ্বালানি খরচ মেটানোও দুষ্কর হয়ে পড়েছে।

এদিকে, বাজারে পাওয়া ইলিশের দামও আকাশচুম্বী। এক কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫,৫০০ থেকে ৬,৫০০ টাকায়। ছোট সাইজের হালি বিক্রি হচ্ছে ২,০০০ থেকে ৪,৫০০ টাকার মধ্যে। এতে ক্রেতাদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫২ হাজার জেলের মধ্যে ৪৩ হাজার জেলে নিবন্ধিত। মেঘনা নদীর আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার জুড়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞাকালে ৩ শতাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অর্ধশতাধিক জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে, পাশাপাশি জব্দ করা হয়েছে ১০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল।

আরও পড়ুনঃ ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে প্রতিটি গৌরবময় অর্জনে শ্রমিকজনতার অবদান অনস্বীকার্য’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন, নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠা ও বৃষ্টির ঘাটতির কারণে সাগর থেকে ইলিশ নদীতে প্রবেশে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় নদীতে পানির প্রবাহ বাড়ছে, আশা করা যায় খুব শিগগিরই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে।”

তিনি আরও জানান, “নিষেধাজ্ঞার সময় সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে মাছের উৎপাদনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমরা আশা করছি।” তবে এখনই কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় জেলার প্রায় ৩০টি মাছঘাটে হতাশা ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে জেলেদের মাঝে।

জেলে পল্লিতে এখন নতুন করে জেগেছে আশঙ্কা—এই মৌসুমও যদি মাছশূন্য থাকে, তবে জীবন-জীবিকায় আরও বড় সংকট নেমে আসবে। তারা চায়, প্রকৃতির অনুকূল পরিস্থিতি দ্রুত ফিরে আসুক, যাতে আবারও নদীতে ভেসে ওঠে রূপালী ইলিশের ঝাঁক।