মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ সাভারের ব্যাংক কলোনীতে গ্যারেজ মিস্ত্রি শাহীন হত্যা মামলার প্রধান আসামি, কথিত চলচ্চিত্র অভিনেতা ও প্রতারক মেহেদী হাসানকে গাজীপুর থেকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ ও ডিবি। গভীর রাতে পরিচালিত যৌথ অভিযানে তাকে আটক করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ১৯ মে রাতে, সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনীতে সাবেক এমপি ডা. সালাউদ্দিন বাবুর বাড়ির অদূরে একটি গ্যারেজের সামনে। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন গ্যারেজ কর্মী শাহীন। ঘটনার পরপরই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সাদা গেঞ্জি পরা এক ব্যক্তি ঘটনাস্থল থেকে হেঁটে পালিয়ে যাচ্ছেন। তদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায়, ওই ব্যক্তি হলেন মেহেদী হাসান—যিনি হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও সরাসরি বাস্তবায়নকারী।
পুলিশের অভিযানে মেহেদী হাসানকে গাজীপুরে তার ভাইয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ঘটনার রাতে গ্যারেজ মালিক বরুণের নেতৃত্বে গ্যারেজে মদ্যপান ও জুয়ার আসর চলছিল। মেহেদী সেখানে অংশ নেন। একপর্যায়ে গ্যারেজ কর্মী শাহীনকে নেশাজাতীয় কিছু এনে দিতে বললে সে অস্বীকৃতি জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মেহেদী হাসান শাহীনকে গুলি করে হত্যা করেন এবং এরপর পালিয়ে যান।
আরও জানা যায়, মেহেদীর কাছে একটি বৈধ অস্ত্র থাকলেও তার কাছে অবৈধ অস্ত্রও ছিল। তার আত্মীয় ঢাকার পুরান পল্টনে অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে।
আরও পড়ুনঃ তাহেরপুর-আজিমপুরে আয়রন ব্রিজ ধসে খালে, দুর্ভোগে ১৫ হাজার মানুষ
ব্যক্তিগত জীবনে মেহেদীর নানা বিতর্ক রয়েছে। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করে তিনি পরিবার নিয়ে সাভারের ছায়াবীথি এলাকায় বসবাস করতেন। তার বাবার নাম নাসির উদ্দিন, পরিবারটি সাভার পৌর এলাকার উত্তরপাড়া মহল্লার বাসিন্দা।
চলচ্চিত্রে খলনায়ক ডিপজলের হাত ধরে তিনি একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। তবে এই পরিচয় ব্যবহার করে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়ার নাম করে একাধিক মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সাভার থানা পুলিশ জানিয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যাকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করা হবে। শাহীন হত্যার বিচার এবং ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা।