মোঃ বিপুল মিয়া, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কাজের সন্ধানে ভারতে গিয়ে দিল্লি থেকে ফেরার পথে বিএসএফের হাতে আটক হওয়া ২৪ জন বাংলাদেশি নারী, পুরুষ ও শিশুকে আনুষ্ঠানিকভাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর মাধ্যমে পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ মে) গভীর রাতে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বালাতাড়ী সীমান্তের ৯৩২ নম্বর আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের পাশে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে এক ঘণ্টাব্যাপী পতাকা বৈঠকে এ প্রত্যাবর্তন সম্পন্ন হয়।
বৈঠকে বিএসএফের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় ৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সহকারী কমান্ড্যান্ট এসএইচএল সিমতি এবং বিজিবির পক্ষে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর হাসনাইন। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিজিবি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, বিএসএফ ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থানরত কিছু বাংলাদেশিকে বাংলাদেশে ‘পুশ-ইন’ করতে চাচ্ছিল। বিষয়টি জানার পর বিজিবি কর্তৃপক্ষ কড়া বার্তা দিয়ে জানায়— প্রকৃত বাংলাদেশি পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
পরে বিএসএফ ২৪ জনের তালিকা পাঠালে বিজিবি যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হয় তারা বাংলাদেশের নাগরিক। এরপর আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মাধ্যমে তাদের গ্রহণ করা হয় এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ফেরত আনা ২৪ জনের মধ্যে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১২ জন পুরুষ, ৮ জন নারী ও ৪ জন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে একই পরিবারের একাধিক সদস্য, যাদের অনেকে ভারতে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর হাসনাইন বলেন, “আমরা আইনানুগ প্রক্রিয়ায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ফেরত এনেছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় সবার পরিচয় যাচাই করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
আরও পড়ুনঃ ইবিতে অন্যের ভরসায় চলছে তদন্ত প্রক্রিয়া
ফেরতপ্রাপ্তদের স্বজনদের মাঝে ফিরে পাওয়ার আনন্দে চোখে জল। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সন্তান, স্ত্রী বা স্বামী ফিরে আসায় পরিবারগুলোতে বইছে স্বস্তি আর পরম আনন্দের ঢেউ।
এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে, আন্তঃসীমান্ত বিষয়গুলোতে বিজিবি ও বিএসএফের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা থাকলে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত সংকটও মানবিকতার আলোকে সমাধান করা সম্ভব। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অনুপ্রবেশ এবং গ্রেফতার এড়াতে দেশের কর্মসংস্থান পরিস্থিতির উন্নয়ন জরুরি, যাতে মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিতে না হয়।