পাভেল ইসলাম মিমুল, স্টাফ রিপোর্টারঃ রাজশাহীতে ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস চৈতি নামের এক গৃহবধূ। গত ২৪ মে রাজপাড়া থানায় মামলাটি দায়েরের পর রাতেই পুলিশ তার স্বামী রেজাউর রহমান শুভকে গ্রেপ্তার করে। তবে গ্রেপ্তারের পর একে একে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর অভিযোগের পুঞ্জ।
২৬ মে রাত সাড়ে আটটায় রাজশাহী বিভাগীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চৈতি তার ওপর চলা নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, শুভ শুধু পারিবারিকভাবে নির্যাতনকারীই নয়, বরং একাধিক ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত।
চৈতির অভিযোগ, র্যাব-৫ এর সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের সহযোগিতায় শুভ একটি কোচিং সেন্টারের পরিচালক মজনু আহমেদ সাগরকে পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র ও মাদক দিয়ে ফাঁসান। এই মিথ্যা মামলায় সাগর বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, শুভ তার স্ত্রী চৈতির কাছে বাবার বাড়ি থেকে বারবার টাকা আনতে চাপ দিতেন। টাকা এনে দেওয়ার পরও তাকে নির্যাতন করা হতো। এছাড়াও, শুভ রাজশাহীর উপশহর এলাকার এক নারী নীলা’র সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান। এই সম্পর্ক জানার পর চৈতির ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।
চৈতির ভাষ্য, নীলার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথা বললে উল্টো নীলার স্বামী মজনু আহমেদ সাগরকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। শুভ একাধিকবার চৈতি ও তার বাবাকে হত্যার হুমকি দেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এমনকি, বাড়ির ওয়ারড্রবের ভেতরে আগ্নেয়াস্ত্র ও বুলেট রাখা থাকত বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন তিনি।
চৈতি বলেন, “আমি একমাত্র নারী হিসেবে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। আমি রাষ্ট্র ও প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার চাই। শুভ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে আমি আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
আরও পড়ুনঃ রায়পুরে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে থানায় মামলা, আসামি পলাতক
ঘটনার আরেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র নীলা’র সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। র্যাব সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, তিনি বর্তমানে র্যাব-৫ এ কর্মরত নেই এবং অন্যত্র বদলি হয়েছেন।
এ ঘটনায় রাজশাহীজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তদন্তে প্রকৃত সত্য উদঘাটনে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা কামনা করছে সচেতন মহল।