
মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতা কাউছার আহম্মদ মিলন হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে জামায়াতে ইসলামী।
মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ঢাকা মহানগর উত্তরের জামায়াতের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
সংবাদ সম্মেলনে ড. রেজাউল করিম বলেন, “কাউছার আহম্মদ মিলনের হত্যাকাণ্ড কোনো রাজনৈতিক নয়—এটি একটি সামাজিক বিরোধের জেরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড। আমরা বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছিলাম যে, যেই দোষী হোক তাকে বহিষ্কার করা হবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বিএনপি সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি। বরং তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কাউছারের মৃত্যু ছিল স্বাভাবিক—যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কাউছারের মাথা ও ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এটি কোনোভাবেই স্বাভাবিক মৃত্যু নয়।”
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (৯ জুন) বিএনপি শহরের গোডাউন রোড এলাকার বশির ভিলা হলরুমে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দাবি করে, কাউছারের ভাই আরজু যুবলীগের কর্মী এবং এলাকায় মাদক ও চুরির ঘটনার জেরে একটি সামাজিক সংঘর্ষে এই ঘটনা ঘটে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, জামায়াতকে অনুরোধ করা হয়েছিল ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে এবং সর্বোচ্চ দুই-একজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে। কিন্তু জামায়াত ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে—যারা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
ড. রেজাউল করিম বলেন, “কাউছারের মৃত্যুর পর আসামিদের পক্ষে মিছিল করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়েছে। এতে বোঝা যায়, রাজনীতিকীকরণের শুরু করেছে তারাই। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত রিপোর্ট প্রকাশের প্রত্যাশা করছি। কাউছারের পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েও তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এ.আর. হাফিজ উল্লাহ, সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী, সহ-সেক্রেটারি মহসিন কবির মুরাদ, শহর জামায়াতের আমির আবুল ফারাহ নিশান এবং চন্দ্রগঞ্জ থানা জামায়াতের সেক্রেটারি রেজাউল ইসলাম সুমন খান।
আরও পড়ুনঃ মেহেরপুরে বাণিজ্য মেলায় র্যাফল ড্রর নামে জুয়ার উৎসব, বন্ধের দাবি এলাকাবাসীর
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত জামায়াত নেতা কাউছার আহম্মদ মিলনের স্ত্রী শিল্পি আক্তার রোববার (৮ জুন) রাতে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে হামলার শিকার হয়ে কাউছার আহম্মদ মিলন সন্ধ্যায় মারা যান। তিনি বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের ওলামা বিভাগের সভাপতি ছিলেন।
জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কোনো পক্ষপাতহীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে জনগণকে ভুল পথে পরিচালিত না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।