
মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এবং মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।
শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে নগরীর লাভ লেইনস্থ স্মরণিকা কমিউনিটি সেন্টারে পবিত্র ঈদুল আজহা-পরবর্তী এক ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এ বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, “তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে অনুষ্ঠিত সৌহার্যপূর্ণ বৈঠক আমাদের সামনে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছে — ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখন প্রয়োজন বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা।”
ঈদ পুনর্মিলনীতে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ছাড়াও চট্টগ্রামের সাংবাদিক, চিকিৎসক, শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ার এবং সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি এক প্রাণবন্ত মিলনমেলায় পরিণত হয়। সকলের জন্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও রাখা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফিরাত, বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা এবং তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “গত ১৬ বছরে মামলা-হামলা-নিপীড়নের মধ্যেও বিএনপির নেতাকর্মীরা আন্দোলন থেকে পিছু হটেননি। তারা আওয়ামী লীগে যোগ দেননি। যারা সত্যিকার ত্যাগ করেছেন, তারাই আগামী দিনে নেতৃত্বে আসবেন। উড়ে এসে জুড়ে বসার সুযোগ এবার আর থাকবে না। আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা থাকলে সে যেই হোক তাকে বাদ দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে দুর্নীতিমুক্ত, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শহীদ জিয়ার ১৯ দফা ও বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা আগামী পথচলা নির্ধারণ করেছি।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মো. নাছির উদ্দীন, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা ড. সুকোমল বড়ুয়া, ডা. রফিকুল ইসলাম, এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, আবু সুফিয়ানসহ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ড্যাব, এ্যাব, প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুনঃ ইবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতির মৃত্যুতে প্রশাসনের শোক
৫ আগস্টের পর বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করা বিভ্রান্তিকর ব্যক্তিদের নিয়ে সতর্ক থাকতে দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন ডা. শাহাদাত। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের যেকোন সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদের চিহ্নিত করে মহানগর কিংবা কেন্দ্রীয় দপ্তরে জানাতে হবে।”
সমাপ্তি বক্তব্যে তিনি বলেন, “ঐক্যবদ্ধ বিএনপি গঠনই এখন সবচেয়ে জরুরি। জনগণ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমাদের লক্ষ্য গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা, এবং একটি সুশাসিত রাষ্ট্র গড়া। সেই লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে মাঠে নামতে হবে।”
এই আয়োজনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও চট্টগ্রামের গণমানুষের এক বিরাট অংশ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন, যা ভবিষ্যতের আন্দোলনের জন্য এক নতুন গতি ও প্রত্যাশা সৃষ্টি করেছে।