পাভেল ইসলাম মিমুল, স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর টিকাপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ নজরুল ইসলাম জুলুকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে আদালতে হাজির করার পর বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। একইসঙ্গে পুলিশের করা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন শুনানির জন্য আগামী মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আদালত।
এর আগে বুধবার সকাল থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল নগরীর টিকাপাড়ায় জুলুর বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার ছেলে জিম ও এক সহযোগীসহ তিনজনকে আটক করা হয়। অভিযানে জুলুর বাসা থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
জানা যায়, নজরুল ইসলাম জুলু দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহীতে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এক সময় তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের হুমকি-ধামকি ও পদবাণিজির অভিযোগে আলোচনায় আসেন।
সূত্র জানায়, তার বিরুদ্ধে অন্তত দেড় ডজন মামলা রয়েছে। নিজের অপকর্ম আড়াল করতে সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতে একটি অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল চালু করেন এবং অবৈধভাবে রাজশাহী প্রেসক্লাব দখল করে নিজেকে সভাপতি ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকসহ সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষকে হুমকি, গালিগালাজ এবং এমনকি গুলি করে হত্যার হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
জুলুর এমন অপকর্মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে শতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
উল্লেখ্য, ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় জুলু ২৯৪ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। মামলাটিতে শেখ হাসিনা এক নম্বর আসামি বলে দাবি করে বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ আল্লাহর ভয় ছাড়া ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়ঃ মসিউল আলম
সন্ত্রাসী জুলুর সাংবাদিকতার ব্যানার ব্যবহার এবং প্রেসক্লাব দখলের ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ চরম ক্ষোভ ও লজ্জা প্রকাশ করেছেন। রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ভাষা সৈনিক পরিবারের সদস্য সাইদুর রহমান বলেন, “সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। এখানে সন্ত্রাসীর কোনো স্থান নেই। জুলুর মতো অপরাধীর বিরুদ্ধে আমরা অতীতেও সোচ্চার ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব।”
সাংবাদিক নেতারা সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং অপরাধ নির্মূলে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।