আবুল কালাম আজাদ, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি: ময়মনসিংহ শহরের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। চাল, পেঁয়াজ, ডাল, মাছ, মাংস এবং সবজির দাম গত কয়েক মাস ধরেই ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও বাজারে তদারকির অভাব এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির ফলে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
শনিবার (৫ জুন ২০২৫) সকালে শহরের মেছুয়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, অনেক দোকানে মূল্য তালিকা ঝুলানো থাকলেও তা অনুসরণ করা হচ্ছে না। পাইকারি ও খুচরা দামের মধ্যে বড় ধরনের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। গৃহবধূ ফারজানা আক্তার বলেন, “প্রতিদিন বাজারে এসে দামের হিসাব মিলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। মাসের মাঝামাঝিতেই টান পড়ে যায় খরচে।”
দিনমজুর রহিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আগে সপ্তাহে একদিন মাছ খেতাম। এখন এক কেজি মাছ কিনতেই কষ্ট হয়। সরকার যদি ঠিকমতো নজরদারি করত, তাহলে এমন হতো না।”
স্থানীয় এক খুচরা বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, “পাইকারি বাজার থেকেই আমাদের মাল বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়ে দাম বাড়াই। তবে এটাও ঠিক, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নিচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন।”
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, বাজারে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে এবং কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, এসব অভিযান এখনো যথেষ্ট নয়। অভিযান আরও জোরদার না হলে দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
আরও পড়ুনঃ কাবরেরার পদত্যাগ চাওয়ায় শাস্তি? বাফুফের জাতীয় দল কমিটি থেকে অব্যাহতি পেলেন শাহীন
সাধারণ মানুষের দাবি, বাজারে সিন্ডিকেট ভেঙে দিলে ন্যায্যমূল্যে পণ্য পাওয়া সম্ভব হবে। গৃহবধূ শারমিন আক্তার বলেন, “নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য বাজারে যাওয়াই একপ্রকার আতঙ্ক। সরকার যদি শক্তভাবে ব্যবস্থা নিত, তাহলে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলত।”
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনলে তা নিম্ন ও মধ্যবিত্তের জীবনযাত্রায় গভীর প্রভাব ফেলবে। বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ও টেকসই তদারকি না থাকার কারণে এই পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে। এখন সময়ের দাবি—কার্যকর ও কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা।