মোঃ তরিকুল ইসলাম, কলাপাড়া (উপজেলা) প্রতিনিধিঃ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নিয়ন্ত্রণাধীন কুয়াকাটায় ভয়াবহ জীর্ণদশার ডাকবাংলো কাম বহুতল সাইক্লোন শেল্টার ভবনটি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বেলা ১১টায় কুয়াকাটা পৌরসভা মিলনায়তনে কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ইয়াসীন সাদেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, গণমাধ্যম কর্মী, সচেতন নাগরিক এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠকদের উপস্থিতিতে এই আশ্বাস দেন। তিনি পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ সময় কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানান।
দীর্ঘদিনেও ভবনটি অপসারণ না করায় কুয়াকাটা বয়েজ ক্লাবসহ সচেতন সমাজ সংগঠকরা আজ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেন। তার প্রেক্ষিতেই জেলা প্রশাসন ও এলজিইডি এ উদ্যোগ নেয়। এতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুশিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্বস্তি প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, আট বছর আগে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও এখনো অপসারণ করা হয়নি। বহুতল এই ভবনটির মূল পিলারে এক যুগ আগেই ফাটল ধরেছে, রড বেরিয়ে পড়েছে এবং জং ধরে গেছে। প্রতিনিয়ত পিলার ও ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে। ভবনটির পাশ দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে ভবনটি কাঁপে, ফলে যে কোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের লাগোয়া রয়েছে লতচাপলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যার কারণে শত শত শিশুর প্রতিদিনের চলাচল অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। জীর্ণদশার তিনতলা ভবনটি বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী ও পর্যটকদের নিকট আতঙ্কের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভবনটি অপসারণের দীর্ঘদিনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয়রা, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। কিন্তু এতদিন কর্তৃপক্ষ ছিলেন নিরব। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ভবনের সামনের সড়কে কুয়াকাটা বয়েজ ক্লাব সামাজিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন আহ্বান করে।
আরও পড়ুনঃ ৩৬ জুলাইয়ের প্রতীকী বার্তায় ৩৬ জনের প্রাথমিক সংসদীয় তালিকা প্রকাশ করলো গণঅধিকার পরিষদ
কুয়াকাটার কেরানিপাড়ার বাসিন্দা ও রাখাইন বুড্ডিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমং তালুকদার জানান, তার বাবা প্রয়াত বাচিং তালুকদারের দানকৃত জমিতে ১৯৭৪-৭৫ সালের দিকে এ ভবনটি নির্মাণ করে সাইক্লোন শেল্টার ও প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ভবনটিকে ডাকবাংলোতে পরিণত করে।
এ ভবনের পূর্ব দিকে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলা ভবন, শিশুদের খেলার মাঠ ও চলাচলের রাস্তা। ফলে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পর্যটক ও শিশুদের মাথায় ছাদ বা পলেস্তরা খসে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
কোমলমতি শিশুরা জানায়, ভবনের পাশেই খেলার মাঠে খেলাধুলার জন্য দোলনা রয়েছে সেখানে খেলাধুলা করে শিশুরা কিন্তু মাঝে মাঝে ভবনের বিভিন্ন অংশ খসে পড়ছে, যে কারণে শিশুরা ভয় ও আতঙ্কে থাকে। ভবনটি অপসারণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে কণ্ঠ মিলিয়েছে শিশুরা, শিক্ষকরা এবং অভিভাবকরাও প্রকাশ করে আসছেন চরম উৎকণ্ঠা।