মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ মেজর সিনহা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ও টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তার বোন রত্না বালার বিরুদ্ধে ভূমি দখল ও হয়রানির অভিযোগ এনেছেন এক ভুক্তভোগী। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নগরবাসী মহিউদ্দিন চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মহিউদ্দিন চৌধুরী জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় স্থানীয় এক শ্রেণির ক্ষমতাধর রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহযোগিতায় প্রদীপ ও তার বোন রত্মাবালা প্রজাপতি দীর্ঘদিন ধরে তার মালিকানাধীন ভূমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে আসছেন। বিষয়টি গোপন রাখতে ও প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ ইস্যুকে বারবার সামনে এনে নানা ষড়যন্ত্র চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “রত্নাবালারা একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করছে, যাতে মূল বিষয় থেকে জনসাধারণের দৃষ্টি অন্যদিকে মোড় নেয়। অথচ, কোনো আদালতে আমাকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি।”
মহিউদ্দিন চৌধুরী আরও জানান, এই সম্পত্তি পূর্বে যুগল রানী প্রজাপতি নামের এক নারী ছাফ কবলা দলিলের মাধ্যমে তার কাছে বিক্রি করেন। রত্নাবালার প্রকৃত পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “তিনি ওয়াসার সাবেক কর্মচারী ছিলেন এবং ‘রত্না প্রভা প্রজাপতি’ নামেই পেনশন তোলেন। আবার জাতীয় পরিচয়পত্রে তিনি নিজেকে ‘রত্না চৌধুরী’ বলে দাবি করেছেন। এ থেকেই স্পষ্ট তার পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, জমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসার অংশ হিসেবে রত্নাবালাদের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে একটি চুক্তিপত্রের প্রস্তাব দেওয়া হয়, যেখানে তারা স্বেচ্ছায় দখল ছাড়ার অঙ্গীকার করে। সেই অনুযায়ী গত ২০ জুলাই নগদ অর্থ পরিশোধ করে ২৪ জুলাই সকালেই মহিউদ্দিন তার জমির দখল বুঝে পান এবং সিডিএ অনুমোদিত বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পরিত্যক্ত কাঠামো ভাঙার কাজ শুরু করেন।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব থেকে ৪০ সাংবাদিক বহিষ্কার, আলোচনায় জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা
তবে এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সুমন চৌধুরী, মো. নবী, বেবী চৌধুরী নামের ব্যক্তিরা এসে বাধা দেন এবং পুনরায় অর্থ দাবি করে জমির দখল পুনর্দখলের চেষ্টা চালান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে তারা সংখ্যালঘুর ওপর হামলার নাটক সাজায় এবং ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের উপস্থিতি ঘটায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও, পরে চাবি হস্তান্তরের নামে প্রতিপক্ষেরা পুলিশকে ব্যবহার করে আবারো দখলের চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ করেন মহিউদ্দিন।
তিনি আরও বলেন, “এরপর প্রতিপক্ষরা অন্য জায়গা থেকে কিছু আসবাব এনে আমার ঘরের সামনে রেখে মিডিয়ার সামনে ভাঙচুরের নাটক সাজায় এবং থানায় মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করে।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, এর আগেও প্রতিপক্ষরা একাধিক ভুয়া মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেছে এবং প্রশাসনের একাংশকে ব্যবহার করে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করেছে। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী মহিউদ্দিন চৌধুরী।
এ নিয়ে এখনো ওসি প্রদীপ বা রত্না বালার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।