মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভাটি নামে মাত্র প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত পৌরবাসী। নিয়মিত কর প্রদানের পরও প্রত্যাশিত সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
জানা গেছে, ১৯৯১ সালে নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে রামগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। তখন লোকসংখ্যা ছিল প্রায় এক লাখ। দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও পৌরসভার নাগরিক সুবিধা বাড়েনি। বরং পৌর সড়কগুলোর বেহাল দশা ও অব্যবস্থাপনায় নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে পৌরবাসী।
বেশিরভাগ সড়ক সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরা রাস্তায় সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিন না থাকায় যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে দুর্গন্ধে হাঁপিয়ে উঠছেন বাসিন্দারা।
পৌরবাসীর অভিযোগ, নিয়মিত কর দেওয়ার পরও দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। কিছু এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ এলাকায় তা নেই। রাস্তার বাতিগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো থাকায় রাতের অন্ধকারে চুরি-ডাকাতি বেড়ে চলেছে।
আরও পড়ুনঃ প্রশাসন ম্যানেজ করে রাতভর জুয়া-মাদক, সংসার ভাঙছে একের পর এক পরিবারের
পৌরসভার টামটা এলাকার বাসিন্দা শামছুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা পৌর এলাকায় থাকলেও কোনো নাগরিক সুবিধা পাচ্ছি না। বৃষ্টির দিনে রাস্তায় পানি জমে হাঁটারও উপায় থাকে না। কর দিচ্ছি নিয়মিত, কিন্তু না পাই সুপেয় পানি, না পাই বিদ্যুৎ, রাস্তা-ঘাটেরও বেহাল দশা। এখন মনে হয়, পৌরসভার বাইরে যারা থাকেন, তারা আমাদের চেয়ে ভালো আছেন।”
শহরের অটোরিকশা চালকরা জানান, সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে রিকশা চালাতে প্রচণ্ড কষ্ট হয়। মাঝেমধ্যেই রিকশার যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। ফলে যাত্রীরাও অনেক সময় রিকশায় উঠতে চান না।
২১ বছর আগে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পেলেও এখনও কাঙ্ক্ষিত নাগরিক সুবিধা মেলেনি এ পৌরসভায়। ১৬৩ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ সড়কের অধিকাংশই এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে রামগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ বলেন, “সড়ক সংস্কারে ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। নাগরিক সেবা বৃদ্ধির জন্যও কাজ চলছে।” পাশাপাশি তিনি পৌরবাসীকে নিয়মিত কর প্রদানের আহ্বান জানান।