
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে দলে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, আন্দোলন-সংগ্রামের দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগপন্থী, সুবিধাবাদী এবং বিতর্কিত ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া হয়েছে। এতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
স্থানীয় বিএনপির বহু ত্যাগী নেতা অভিযোগ করে জানান, যারা দুঃসময়ে দলকে বাঁচাতে রাজপথে লড়াই করেছেন, গ্রেপ্তার-নির্যাতন সহ্য করেছেন, আজকের কমিটিতে তাদের স্থান হয়নি। বরং যারা অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কিংবা দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠে নিষ্ক্রিয় ছিলেন, তারাই আজ নেতৃত্বের আসনে।
অভিযোগে আরও উঠে আসে, ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) লাঙ্গল প্রতীকে জয়মনিরহাট ইউপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া আব্দুল ওয়াদুদকে এই কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। অন্যদিকে চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী লাভলুকে কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে লাভলুর অংশগ্রহণের ছবি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ পাঁচবিবিতে সাড়ে ৯ হাজার কেজি মেয়াদোত্তীর্ণ সার জব্দ, পলাতক গুদাম মালিক
ফেসবুকজুড়ে বিষয়টি নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা। অনেকে কমিটিকে আখ্যা দিয়েছেন ‘নির্বাচনমুখী সুবিধাবাদীদের জোট’ হিসেবে। ফেসবুক পোস্টে সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কাজী মো. আলাউদ্দিন মন্ডল ও সদস্য সচিব মো. সহিদুল ইসলাম আকন্দকে নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আহ্বায়ক আলাউদ্দিন মন্ডলের পরিবার আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং তিনি জনবিচ্ছিন্ন নেতা। অন্যদিকে সদস্য সচিব সহিদুল ইসলাম আকন্দ অতীতে ছাত্রদল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন এবং তার পরিবারের একাধিক সদস্য আওয়ামী লীগ ও ইসলামী আন্দোলনের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এমনকি তার বিরুদ্ধে মাদক মামলায় কারাবন্দি থাকার অভিযোগও রয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, প্রভাবশালী কিছু নেতা অর্থের বিনিময়ে এ ধরনের বিতর্কিত কমিটি গঠন করেছেন। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের তীব্র ক্ষোভের কারণে কমিটির পুনর্গঠন বা সংশোধনের দাবি উঠেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভূরুঙ্গামারী উপজেলা বিএনপির এই কমিটি যদি দ্রুত সংশোধন না করা হয়, তবে তা দলীয় ঐক্যে বড় ধরনের ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে।