
মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান র্যাব-৫। সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক ও অস্ত্র কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে সংস্থাটি সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। বিশেষ করে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ নেতাদের আটক এবং দুই হাতে গুলি চালানো সন্ত্রাসী রুবেলকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় র্যাব-৫ রাজশাহীবাসীর কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়।
তবে এই জনপ্রিয়তাই এখন মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের জন্য হুমকিতে পরিণত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করে কুখ্যাত মাদক মামলার আসামি লামিয়া আক্তার ও তার স্বামী শাহাজান র্যাব-৫ এর এফএস সদস্য এসআই স্বাধীনকে জড়িয়ে নানা মিথ্যা অভিযোগ তোলেন। সচেতন মহলের মতে, তাদের এ প্রচেষ্টা মূলত র্যাব-৫ এর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ ও অভিযানে ভাটা টানার এক পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।
পুলিশি নথি অনুযায়ী, লামিয়ার নামে চন্দ্রিমা ও মতিহার থানায় চারটি মাদক মামলা রয়েছে। তার স্বামী শাহাজানের বিরুদ্ধেও রাজশাহীর রাজপাড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা, প্রতারণা, চোরাচালান ও অস্ত্র কারবারে জড়িত। রাজশাহীর বুধপাড়া এলাকায় তাদের বাড়ি মাদকসেবী ও অপরাধীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তারা প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভয়ভীতি ও মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন।
গোপন অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, শাহাজানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত এলাকায়, যা মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের জন্য কুখ্যাত। সেখান থেকেই তারা রাজশাহীতে মাদক সরবরাহ করে এবং অস্ত্র সিন্ডিকেট পরিচালনা করে। এমনকি ৫ আগস্ট পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র কেনাবেচায়ও তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। অস্ত্র বেচাকেনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে গণমাধ্যম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে পৌঁছেছে। পাশাপাশি লামিয়ার ইয়াবা সেবনের ভিডিওও গণমাধ্যমের কাছে সুরক্ষিত রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন বেরোবি শিক্ষার্থীরা
র্যাব-৫ সূত্র জানায়, অভিযুক্ত এসআই স্বাধীন মাত্র ছয় মাস আগে র্যাবে যোগ দিয়েছেন। তার সঙ্গে ওই দম্পতির কোনো ব্যক্তিগত যোগাযোগ নেই। তবে শাহাজানের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্রের ভিডিও পাওয়ার পর র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে। বিষয়টি আঁচ করেই দম্পতি স্বাধীনকে বিতর্কিত করার নীলনকশা আঁকে। এমনকি লামিয়া তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে বলেছেন—তিনি স্বাধীনকে দেখে নেবেন। এর কল রেকর্ডও র্যাবের হাতে রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে রাজশাহীবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন—যে দম্পতি একাধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি, তারা কীভাবে এত দুঃসাহস দেখায় যে র্যাব-৫ এর মতো রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে?
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, এই অপচেষ্টা কোনোভাবেই সফল হবে না। বরং মাদক ও অস্ত্র সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।