মোঃ আব্দুল আলিম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একমাত্র বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি গত এক বছর ধরে বন্ধ পড়ে আছে। হঠাৎ করেই কোনো সরকারি নির্দেশনা ছাড়াই সেবাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা। বিকেলে চিকিৎসা নিতে হলে এখন তাদের বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতালে গিয়ে বাড়তি খরচ বহন করতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মাঠে গরু চরছে, প্রধান ফটকের পাশে বাঁধা রয়েছে পাঁচটি গরু। জরুরি বিভাগে কোনো চিকিৎসক না থাকলেও চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারী দায়িত্ব পালন করছেন। বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবার ভবনে ঝুলছে তালা, বন্ধ অবস্থায় রয়েছে কাউন্টার।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা দায়িত্ব নেওয়ার সময় থেকেই বৈকালিক কেন্দ্রটি বন্ধ অবস্থায় পান। তবে রাজশাহী সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, শুধু পবায় নয়, সারা দেশেই বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। আবার চালু করতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন রিফর্ম প্রয়োজন।
পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে আউটডোরে মাত্র দুই টাকার টিকিট কেটে প্রায় ৭০০ রোগী চিকিৎসা নেন। পরে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সরকারি উদ্যোগে বিকেলে বৈকালিক সেবা ২০০ টাকায় চালু করা হলেও প্রাথমিক সাড়া মিললেও কয়েক মাসের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়। এপ্রিল মাসে ৭২ জন, মে মাসে ৯৪ জন, জুনে ৮৮ জন ও জুলাইয়ে ৭৬ জন রোগী সেবা নেন। এরপর হঠাৎ করেই কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।
হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, বিকেলে চিকিৎসকরা উপস্থিত থাকেন না। শহরের বেসরকারি হাসপাতালে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়ায় তারা এখানে বসা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে আর কোনো চিকিৎসক আসেননি।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা। পবা উপজেলার বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, “আগে বিকেলে এখানে কম খরচে ভালো ডাক্তার দেখাতাম। এখন বৈকালিক সেবা বন্ধ থাকায় আমাদের মতো গরিবদের চিকিৎসা করানো কঠিন হয়ে পড়েছে।”
আরও পড়ুনঃ ভিপি নূরের উপর হামলা, জড়িতদের বিচার ও জাপাকে নিষিদ্ধসহ তিন দাবিতে উত্তাল ইবি
এ বিষয়ে পবা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, “আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রটি বন্ধ। কবে বা কীভাবে বন্ধ হলো তা বলতে পারবো না। তবে এখানে বৈকালিক সেবা চালু ছিলো সেটিও আগে জানতাম না। জরুরি বিভাগে চিকিৎসক থাকেন, হয়তো তারা বিশ্রামে ছিলেন। তবে বৈকালিক সেবা এখন বন্ধ আছে।”
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. এস.আই.এম রাজিউল করিম বলেন, “শুধু পবায় নয়, সারা দেশেই এই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। রোগীর উপস্থিতি না থাকায় এটি কার্যকর হয়নি। তবে সরকারি নির্দেশে এটি বন্ধ হয়নি। জনপ্রিয় করতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন রিফর্ম দরকার। ভবিষ্যতে আবারো এটি চালু হতে পারে।”