
মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা নির্বাচনের আগেই গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান এবং পরিবারগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেন, গুমের মতো ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। এ ঘটনায় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-এমপি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সকালে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে। এতে মানবাধিকার কর্মী, আইনজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনরা অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, সে সম্পর্কে পরিবারগুলো কিছুই জানতে পারছে না। মৃত্যুসনদ না থাকায় তাদের সম্পত্তি অরক্ষিত থেকে যাচ্ছে এবং পরিবারগুলো সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
বক্তারা প্রশ্ন তোলেন, সরকারের প্রতিবন্ধকতা কোথায়? কেন এত সময় পেরিয়ে গেলেও গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান দেওয়া যাচ্ছে না? তারা জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচনের আগেই গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনতে হবে। গুমের সংস্কৃতি র্যাব চালু করেছে উল্লেখ করে সংগঠনটির বিলুপ্তিরও দাবি জানান তারা। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, যেন ভিকটিম পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
আরও পড়ুনঃ এক যুগেও সন্ধান মেলেনি ওয়ালিউল্লাহ ও মুকাদ্দাসের, সন্ধান চায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহেদুল করিম কচি। তিনি বক্তব্যে বলেন, “আজকে আনু মোহাম্মদরা মব নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তারা বিএনপির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন। অথচ আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ, বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর ভয়াবহ মব করা হলেও আনুরা তখন মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন। ১৯৯৬ সালে আবু আলম, শহীদ খানরা জনতার মঞ্চ সৃষ্টি করে প্রথম মব কালচার শুরু করে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। সেই কুশিলবরা এখন আবার সক্রিয় হয়েছে। সরকারকে বলব— অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।”
অধিকারের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মীর বরকত। বক্তব্য দেন ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি নাজের হোসেন, এডভোকেট মোস্তফা নূর, সাংবাদিক সোহাগ কুমার বিশ্বাস, এডভোকেট সাইফুল আবেদীন, সাংবাদিক কামাল পারভেজসহ ভিকটিম পরিবারের সদস্য আব্দুল মান্নান, আনিকা আক্তার নূর ও সৌদিআরা বেগম।
অনুষ্ঠান শেষে একটি র্যালি প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে চেরাগী পাহাড় মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন অধিকার চট্টগ্রামের ফোকাল পারসন ওসমান জাহাঙ্গীর। সঞ্চালনা করেন ওচমান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।