মোঃ জাহিদুর রহিম মোল্লা, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি: রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবু বকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অনিয়ম, তথ্য গোপন এবং দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে বহাল থাকার অভিযোগ উঠেছে।
তিনি ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর কালুখালীতে যোগদান করেন। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তাদের এক কর্মস্থলে সর্বোচ্চ তিন বছরের বেশি থাকার বিধান না থাকলেও তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে এখানেই কর্মরত আছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই তিনি এতদিন একই কর্মস্থলে বহাল আছেন।
অভিযোগ রয়েছে, যোগদানের পর থেকেই দেশীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষা, অবৈধ জাল বিনষ্ট, নিয়মিত বাজার তদারকি, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি, মা ইলিশ রক্ষা অভিযান এবং জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালনে অনিয়ম করে আসছেন তিনি। এসব অভিযোগ যাচাই করতে স্থানীয় একজন সাংবাদিক গত ১ জুলাই তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন।
আবেদনে ২০২৩ ও ২০২৪ সালের মা ইলিশ রক্ষা অভিযান, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি এবং জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালনের বাজেট ও খরচের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়। তবে দীর্ঘদিন গড়িমসি করার পর তিনি গত ৭ আগস্ট তথ্য সরবরাহ করেন।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে বাজেট ছিল ৬০ হাজার টাকা, খরচও দেখানো হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। ২০২৪ সালে বাজেট ৬৫ হাজার টাকা, খরচও সমপরিমাণ। জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচিতে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে পৃথকভাবে ৭৫ হাজার টাকা করে বাজেট পাওয়া এবং একই পরিমাণ খরচ দেখানো হয়েছে। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ২০২৩ সালে ৫০ হাজার টাকা ও ২০২৪ সালে ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পান, যা পুরোপুরিই খরচ দেখানো হয়েছে। তবে কোন খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ ইবিতে ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের নামে হল না থাকার শূন্যতা অনুভব করেছিঃ আহমাদুল্লাহ
এ বিষয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করে একজন কর্মকর্তা বছরের পর বছর একই জায়গায় বহাল থাকছেন। আবার জনস্বার্থে চাওয়া তথ্য গোপন করছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
প্রশ্ন করা হলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “আমি যা বরাদ্দ পেয়েছি তার সব টাকাই খরচ করেছি। কোন খাতে কত খরচ করেছি তা আপনাদের দেখানোর নিয়ম নেই। আমাদের অডিট হয়, তখন তারা দেখবেন।”
এ বিষয়ে কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহুয়া আফরোজ বলেন, “তথ্য জানার অধিকার দেশের সকল জনগণের রয়েছে। মৎস্য কর্মকর্তাকে অবশ্যই বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। কেন তিনি তথ্য দেননি তা আমার বোধগম্য নয়।”