
মোঃ আব্দুল আলিম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কানাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে খেলার মাঠ থেকে মাটি খনন করে গর্ত করায় দুটি বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। গভীর ওই গর্তে বর্ষার বৃষ্টিতে পানি জমে এখন সেটি ছোট পুকুরের আকার নিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এটি শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় ২০-২৫ দিন আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজে উপস্থিত থেকে মাঠের মাটি কেটে নিয়ে পাশের একটি খাল ভরাট করানো হয়। এতে মাঠে ১২-১৫ ফুট গভীর একটি গর্ত সৃষ্টি হয়। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে গর্তটি পানিতে ভরে গেলে চারপাশের মাটি ধসে পড়তে শুরু করেছে। সরকারের অর্থায়নে নির্মিত বিদ্যালয়ের দুটি ভবনও ধসে পড়ার শঙ্কায় পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আঙ্গুর হোসেন বলেন, “হঠাৎ করে এখানে এত বড় গর্ত খোঁড়া হলো কেন, মানুষ কিছুই জানে না। স্কুলের বাচ্চারা যেকোনো সময় পড়ে গিয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব মোঃ শামিম বলেন, “গভীর গর্তে ইতোমধ্যে দুই শিশু পড়ে গিয়ে মৃত্যুমুখে পড়েছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় তারা বেঁচে গেলেও ভবিষ্যতে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের ভবনগুলোও ঝুঁকিতে আছে।”
চর আষাড়িয়াদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আফতাব উদ্দিন বলেন, “আমি ইউএনও স্যারকে বলেছিলাম অন্য জায়গা থেকে মাটি আনা হোক। কিন্তু তিনি বলেন, এখানে পরে মাটি ভরাট করে দেওয়া হবে। আমি আপত্তি জানালেও তিনি বলেন, ‘আমি ইউএনও বলছি, আপনি আমার ওপরে আস্থা রাখতে পারছেন না?’ ফলে আমার কথা শোনেননি।”
আরও পড়ুনঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসডিএফ’র স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
একইভাবে চর আষাড়িয়াদহ কানাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আজগর আলী জানান, “আমি চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেছিলাম অন্য জায়গা থেকে মাটি আনার জন্য। কিন্তু তিনি ইউএনওর নির্দেশের কথা বলে এখান থেকেই মাটি তোলেন। শুরুতে গভীরতা কম হবে ভেবেছিলাম, কিন্তু পরে দেখি গর্ত অনেক গভীর হয়েছে। এতে আমার প্রতিষ্ঠান এখন ঝুঁকিপূর্ণ।”
চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফুল ইসলাম (ভোলা) বলেন, “আমরা সেখানে শিশু পার্ক নির্মাণ করব। কিন্তু বন্যার কারণে মাটি পাইনি। তাই স্কুলের মাঠ থেকে মাটি তুলেছি। শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করেছি। পরে আবার ভরাট করে দেওয়া হবে। ইউএনও স্যার নিজে উপস্থিত থেকে এ কাজ করিয়েছেন।”
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফয়সাল আহমেদ বলেন, “আমরা সেখানে একটি শিশু মিনি পার্ক করব। বর্ষার কারণে অন্য জায়গা থেকে মাটি আনা সম্ভব হয়নি। তাই স্কুলের মাঠ থেকে মাটি তুলে অন্য পাশে নিয়েছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় আবার মাঠে মাটি ভরাট করে দেওয়া হবে। চেয়ারম্যানকেও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”