মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে সংঘটিত হয়েছে এক হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড। ঘরে একা পেয়ে মা-মেয়েকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় ঘরে থাকা প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে তারা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর চন্ডিপুর শ্রীরামপুর গ্রামের মঙ্গলবার বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন—ওই এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সোনাপুর বাজারের মিজান ক্রোকারিজের স্বত্বাধিকারী মো. মিজানুর রহমানের স্ত্রী জুলেখা বেগম (৫৫) ও তার কলেজপড়ুয়া মেয়ে তানহা আক্তার মিম (১৯)।
নিহতের ছেলে ফরহাদ হোসেন রাব্বী জানান, “প্রতিদিনের মতো বাবার সঙ্গে দোকানে গিয়েছিলাম। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাসায় ফিরে দেখি মূল গেট খোলা। ঘরে ঢুকে দেখি আলমারি ও জিনিসপত্র এলোমেলো। চিৎকার করে মা ও বোনকে ডাকতে থাকি, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। পরে মায়ের রুমে গিয়ে দেখি মা ও বোন রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে। তাদের গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।”
চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, “আমার স্ত্রী ও মেয়ে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। আমার পারিবারিক বা ব্যবসায়িক কোনো শত্রুতা ছিল না।”
আরও পড়ুনঃ ফ্যাসিস্টমুক্ত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে ইবি ছাত্রদলের স্মারকলিপি, বিক্ষোভ
নিহত জুলেখা বেগমের বড় মেয়ে রুমি সুলতানার স্বামী ও রামগঞ্জ বাজারের খাদেম ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী গোলাম মর্তুজা মামুন বলেন, “আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। কয়েক দিন আগে ছোট ভাই ফরহাদ ও ছোট বোন তানহার বিয়ের জন্য স্বর্ণালংকার কেনা হয়েছিল। হয়তো সেই স্বর্ণালংকারই এই হত্যাকাণ্ডের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল বারী বলেন, “ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি ডাকাতি হিসেবে মনে হলেও সব দিক বিবেচনায় তদন্ত চলছে। লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী বলেন, “মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি ডাকাতি নাকি পরিকল্পিত হত্যা—বিষয়টি তদন্তাধীন। জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”