জায়েদ মাহমুদ রিজন নালিতাবাড়ি প্রতিনিধিঃ শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌরসভার গোবিন্দনগর ছয়আনী পাড়া এলাকায় চলাচলের রাস্তায় টিনের বেড়া তুলে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অন্তত ৩০টি পরিবারের দুই শতাধিক মানুষ। এক পাশে খরস্রোতা ভোগাই নদী, অপর পাশে বসতবাড়ি— মাঝখান দিয়ে ছিল গ্রামবাসীর একমাত্র কাঁচা রাস্তা। সেই রাস্তাটিতে টিনের দেয়াল তুলে দেওয়ায় গত পাঁচ দিন ধরে বন্ধ হয়ে গেছে মানুষের যাতায়াত পথ।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, চলাচলের রাস্তাটি টিনের দেয়াল দিয়ে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি সেখানে ঘর নির্মাণের জন্য খুঁটি পুতে রাখা হয়েছে। স্থানীয় গোবিন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বাধা পেয়ে ফিরে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কৃষক ও দিনমজুররা যাতায়াত করতেন। কিন্তু এলাকার আব্দুল মতিন ও জুয়েল মিয়া হঠাৎ করে ওই রাস্তাটি নিজেদের মালিকানাধীন বলে দাবি করে টিনের বেড়া তুলে দেন। এতে শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে, কৃষকরা কৃষিপণ্য বাজারে নিতে পারছেন না, গ্রামবাসীকে ঘুরপথে চলাচল করতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থী লিমা আক্তার জানায়, “এক সপ্তাহ ধরে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই আমরা স্কুলে যেতে পারি না। আমরা চাই, রাস্তাটা দ্রুত খুলে দেওয়া হোক।”
মাদরাসার পরিচালক ও মুহতামিম হাফিজুল ইসলাম বলেন, “আমার মাদরাসার প্রায় দেড়শ শিক্ষার্থী রাস্তায় টিনের বেড়া দেওয়ার কারণে আসতে পারছে না। এতে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া যারা রাস্তা বন্ধ করেছে, তারা আমাদের ভয়ভীতিও দেখাচ্ছে।”
স্থানীয় ইউসুফ আলী জানান, “আমাদের গ্রামের ৩০টি পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। এখন রাস্তার ওপর দেয়াল তুলে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়ি ও বাগানের ভেতর দিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছি।”
আরও পড়ুনঃ সরকারি অফিস প্রাঙ্গণে বহিরাগতদের আনাগোনা, নিরাপত্তা ঝুঁকিতে কর্মচারীরা
অভিযুক্ত জুয়েল মিয়া বলেন, “রাস্তার জায়গাটা আমাদের নিজস্ব। জোর করে এখান দিয়ে রাস্তা করা হয়েছিল। আমরা আদালতের রায় অনুযায়ী দেয়াল তুলেছি, কোনো অন্যায় করিনি।”
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, “মানুষজন যে রাস্তা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করছে, কেউ তা বন্ধ করতে পারে না। বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার কোনো আইনি সুযোগ নেই।”
গ্রামবাসী দ্রুত রাস্তা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া এভাবে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের শেষ হবে না।