spot_img

― Advertisement ―

spot_img

ছাতকে হাটবাজার উন্নয়নের আড়ালে কোটি টাকার ভিটা বাণিজ্য, সংঘাতের আশঙ্কা

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় হাটবাজার উন্নয়নের নামে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোটি টাকার ভিটা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।স্থানীয়দের অভিযোগ, ছাতক-সিলেট...
প্রচ্ছদসারা বাংলাছাতকে হাটবাজার উন্নয়নের আড়ালে কোটি টাকার ভিটা বাণিজ্য, সংঘাতের আশঙ্কা

ছাতকে হাটবাজার উন্নয়নের আড়ালে কোটি টাকার ভিটা বাণিজ্য, সংঘাতের আশঙ্কা

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় হাটবাজার উন্নয়নের নামে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোটি টাকার ভিটা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ছাতক-সিলেট সড়কের সংলগ্ন সরকারি জমিতে প্রায় একশ’র বেশি ভিটা বন্দোবস্ত দেওয়ার নামে প্রতি ভিটার জন্য ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব রামপুর মৌজার ১নং সরকারি খতিয়ানভুক্ত (জে.এল. নং ২৪৬) ভূমিতে বন্দোবস্তের অনুমোদন পাওয়ার আগেই প্রায় এক মাস ধরে ভিটা নির্মাণের কাজ চলছে। সরকারি নীতিমালায় নামমাত্র মূল্যে বন্দোবস্ত দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা রূপ নিচ্ছে এক প্রকার অর্থ বাণিজ্যে, যা থেকে সংশ্লিষ্ট একটি চক্র দেড় কোটি টাকার বেশি অর্থ উত্তোলন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বন্দোবস্ত কার্যক্রম প্রকাশ্যে আসতেই পার্শ্ববর্তী জমিতেও মালিকানা দাবির ঝড় শুরু হয়েছে। এর জেরে ব্যবসায়ী জহির হোসেন কবরস্থান ও ঈদগাহের জন্য জমি দাবি করায় চাঁদাবাজির মামলার শিকার হন। ওই মামলার প্রতিবাদে গত ২১ অক্টোবর স্থানীয়রা গোবিন্দগঞ্জে মানববন্ধন করেন। অন্যদিকে, বিপরীত পক্ষও পাল্টা কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে, ফলে এলাকায় উত্তেজনা ও সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত ৮ আগস্ট এক সভায় গোবিন্দগঞ্জ বাজারে নয়টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে চারটি প্রকল্পে ১৪ লাখ টাকা এবং পরে আরও দুটি প্রকল্পে ১০ লাখ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। মোট ২৪ লাখ টাকার সরকারি প্রকল্পকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র কোটি টাকার বেশি বাণিজ্যে লিপ্ত হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এ নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহল তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

গোবিন্দগঞ্জ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাজান মিয়া বলেন, “এ বিষয়ে বিস্তারিত সভাপতি জানেন, আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।”

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “আমি সরকারি নীতিমালার বাইরে কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করিনি। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত এসিল্যান্ড বিষয়টি দেখবেন।”

আরও পড়ুনঃ ইবিতে কমপ্লিট শাটডাউনের হুঁশিয়ারি ছাত্রদলের

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, “সরকার ব্যবসায়ীদের জন্য শেড নির্মাণ করছে এবং এখান থেকে শুধুমাত্র সরকারি নির্ধারিত অর্থই নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। দোকান বরাদ্দের নামে কেউ যদি টাকা লেনদেন করে থাকে, তাহলে তা খতিয়ে দেখা হবে।”

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ইউএনও তরিকুল ইসলাম নিজের ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “গোবিন্দগঞ্জ বাজারের দোকানকোঠা বরাদ্দের জন্য কারও সঙ্গে কোনো আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কেউ যদি অর্থ দাবি করে, তাহলে দ্রুত প্রশাসনকে অবহিত করার আহ্বান জানানো হলো।”

স্থানীয়দের মতে, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের আড়ালে যদি এমন ভিটা বাণিজ্য ও অর্থ লেনদেন চলতে থাকে, তবে গোবিন্দগঞ্জে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ও জনবিশ্বাস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।