রাত ১২ টা ছুঁই ছুঁই। চারিদিকে যখন সবকিছু নিস্তব্ধতার পথে, সে সময়ে গোপনে সড়ক বিভাগের সরকারি মালামাল ঠিকাদারদের কাছ থেকে নেন ঠাকুরগাঁওয়ের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাফিউল ইসলাম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার পৌরশহরের সড়ক বিভাগের পরিদর্শন বাংলোর পেছনে দেখা যায় এমন চিত্রের। মালামাল যথাযথভাবে বুঝে ও পরিমাপ করে নেয়ার জন্য নেই কোন দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। ফলে যথাযথ পরিমাপ ব্যতী রেখেই নিম্নমানের মালসামগ্রী আনলোড করা হচ্ছিল পূর্বের স্তূপকৃত মালামাল গুলোর উপরে।এতে বুঝার কোন উপায় নেই কোনটি আগের আর কোনটি চলতি বছরের৷ শুরুতে সেখানকার প্রবেশ গেটের তালা খোলা থাকলেও পরের দিন থেকে গেটে তালা দিয়ে মালামাল নামান শ্রমিকরা।
আরও পড়ুনঃ ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে জবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
সড়ক ও জনপথ অফিসের তথ্যমতে, সড়ক -সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সাপ্লাইয়ের মোট পাঁচটি টেন্ডার এ পর্যন্ত হয়েছে। যাহার টেন্ডার নম্বর (৯৩৬৮৬৪,৯৩৬৮৬৪,৯২৬৯৩৮,৯২৬৯২৭,৯২৬৯৪১ যার আনুমানিক বরাদ্দ হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। তবে বরাদ্দ থাকলে নিজের খেয়াল খুশিমত নামেমাত্র মালামাল নিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন নির্বাহী প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ ছাড়াও আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া ও ঠিকাদারের কাছে বিভিন্ন সময়ে উপহার নেওয়া ও বাড়ির কাচাঁ বাজার করে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে দপ্তরটির নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। গত বছরের ১ নভেম্বর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জনস্বার্থে ঠাকুরগাঁও থেকে গাইবান্ধা জেলা সড়ক বিভাগে বদলীর নির্দেশ হলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদবির করে স্বপদে বহাল থেকে যান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দপ্তরের এক কর্মচারী বলেন,এ বছরে সড়ক রিপেয়ার ও মেইনটেনন্সের জন্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ হয়৷ কিন্তু নামে মাত্র মালামাল কিনে বাকী সব টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা সভাপতি আবু মহী উদ্দীন বলেন, রাতের বেলা মালামাল বুঝে নেওয়া হলে’ নয় ছয় ‘করার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। রাজস্ব খাতে বরাদ্দের অর্থ ব্যয়ের সরকারি নীতিমালা আছে। দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মালামাল বিধি মতো বুঝে দিবেন , সড়ক বিভাগের দ্বায়িত্ববান কর্মকর্তার উপস্থিতিতে। এর ব্যত্যয় ঘটলে সেটা ঘটানো হয়েছে সরকারি সম্পদ আত্মসাৎ করার অসৎ উদ্দেশ্যে। আশা,করি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঠাকুরগাঁওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাফিউল ইসলাম বলেন, ঠিকদাররা দিনের বেলা না দিতে পারায় রাতের বেলা নিতে হয়েছে। আর মালামাল নেওয়ার সময় আমাদের সেখানে একজন কর্মকর্তা থাকার কথা। তবে রাত বেশি হওয়ায় তিনি হয়তো ছিলেননা। যতটুকু মালামাল বরাদ্দ আমরা ততটুকু নেই।