ঢাকার সাভারে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ও নারী সহযোগীসহ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল হামিদকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় স্বপন নামে তাদের আরও এক সহযোগী পালিয়ে যায়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব। এর আগে, সোমবার (১৩ মে) সাভারের বিরুলিয়ার খনিজনগর এলাকার স্বপনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও বিরুলিয়ার কালিয়াকৈর গ্রামের মো. আব্দুল ওহাবের ছেলে মো. আব্দুল হামিদ (৪০) ও একই ইউনিয়নের খনিজনগর এলাকার মৃত হানিফ মিয়ার মেয়ে মোসা. পপি আক্তার (২০)। এ ঘটনায় পপি আক্তারের স্বামী মাদক ব্যবসায়ী স্বপন পলাতক রয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে : মির্জা ফখরুল

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আব্দুল হামিদ যুবলীগের পদ বাগিয়ে নেওয়ার পর ঝুট ব্যবসা দখলে নিতে প্রকাশ্যে গুলি ছুড়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। আধিপত্য বিস্তারে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মাঝেমধ্যে মহড়াও দেন তিনি।

ওই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে শীর্ষ মাদক কারবারি স্বপনের সঙ্গে যৌথভাবে মাদক কারবার শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন সময় বাইরে থেকে নারী ভাড়া করে এনে এলাকায় অনৈতিক কাজ করেন। প্রায় সময়ই মদ ও ইয়াবার আসর বসান। গ্রেপ্তারের সময় একজন নারী দেহ ব্যবসায়ীকে নিয়ে অবৈধ কাজ করছিলেন। হামিদ প্রভাবশালী হওয়ায় তার এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।

আব্দুল হামিদের গ্রেপ্তারে স্থানীয়দের উচ্ছ্বাস করতে দেখা যায়। এসময় তারা ডিবি পুলিশকে ধন্যবাদ জানায়। এ ছাড়াও আব্দুল হামিদ ২০১৫ সালে র‍্যাবের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হলেও আবার জামিনে বেরিয়ে এসে একই রকম অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, সাভার পৌর এলাকায় এক সময় মাদক কারবার করতেন স্বপন। পরে বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতার সঙ্গে যৌথভাবে মাদক কারবার শুরু করেন।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের এসআই শুভ মণ্ডল ও এসআই মো. আনোয়ার হোসেনের একটি টিম সাভার মডেল থানাধীন বিরুলিয়া ইউনিয়নের খনিজনগর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কুখ্যাত মাদক কারবারি আব্দুল হামিদ ও মাদক সম্রাজ্ঞী মোসা. পপি আক্তারকে আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে ৩০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, আটকদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি মাদক মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাদক সংগ্রহ করে সাভারের বিরুলিয়াসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতেন বলে স্বীকার করেছেন।

বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল হামিদের গ্রেপ্তার ও তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জি এস মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ঘটনাটি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। বিস্তারিত আমি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানাবো। সে যদি আইনশৃঙ্খলা ও সংগঠনের পরিপন্থি কোনোরকম কার্যক্রম করে থাকে তাহলে আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।