মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ সাভারে মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তারে সহযোগীতা করায় হত্যার পর মাটি চাপা দেওয়া সিমা বেগমের মরদেহ উদ্ধারের ৪ দিনের মাথায় আরও একটি মরদেহের সন্ধান পেয়েছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার (১০ জুন) দুপুর থেকে সাভারের আনন্দপুর সিটিলেন এলাকার মাদক কারবারি ও সীমা হত্যায় অভিযুক্ত স্বপনের দুই তলা বাড়ির নিচ তলায় মরদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানায় ডিবি।
পরে মরদেহ উদ্ধারে অভিযান শুরু করে ডিবি। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে সন্ধ্যা সাতটার দিকে অভিযান বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানে বাড়িটি ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
মরদেহটি প্রায় ১৪ মাস আগে নিখোঁজ হওয়া একই এলাকার যুবক তোফাজ্জল হোসেন ওরফে টোনোর বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। দুই হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্র থাকতে পারে বলে ধারণা করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
নিখোঁজ তোফাজ্জল হোসেন ওরফে টোনো সাভার পৌরসভার ইমান্দিপুরের সেলামত মিয়ার ছেলে। গত বছরের এপ্রিলের ২১ তারিখে টোনোর বাবা সেলামত মিয়া সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। এর আগে গত বছরের ১৯ এপ্রিল বাসার পাশ থেকে নিখোঁজ হয় তোফাজ্জল। এরপর টোনোর খোঁজে ৩০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে বিভিন্ন স্থানে পোস্টার, মাইকিং করে পরিবার। কিন্তু তার সন্ধান মেলে না।
আরও পড়ুনঃ মেজরটিলায় পাহাড় ধসে মাটিচাপায় তিন জনের মৃত্যু
অভিযুক্ত স্বপন সাভার পৌরসভার ইমান্দিপুরের শাহজাহানের ছেলে। সে সাভারে চিহ্নিত মাদককারবারি হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয় বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, আনন্দপুর এলাকায় তার বাড়িতে সকাল থেকে ডিবি পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। শুনেছি, এই বাড়ির ভেতরে একাধিক মানুষকে হত্যা করে মরদেহ গুম করেছে স্বপন।
ডিবি জানায়, গত বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের খনিজনগর এলাকার মাদক কারবারি স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে নিখোঁজ সীমা বেগমের মরদেহ মাটিচাপা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সেই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকায় সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আরও একজনকে হত্যার পর মাটি চাপা দেওয়ার করা স্বীকার করে।
ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্বপনের স্ত্রীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করি। সেই ক্ষোভ থেকে স্বপন ওই এলাকার সীমা বেগমকে অপহরণ করে হত্যার পর মাটি চাপা দেয়।
তিনি আরও জানান, এঘটনায় সাইফুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে আরও একটি মরদেহের তথ্য পাওয়া যায়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে স্বপনের নিজ বাড়ির মেঝে খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার অভিযান চলবে।
গত ১৩ মে স্থানীয় সীমা বেগমের সহযোগীতায় সাভারের মাদক ব্যবসায়ী স্বপনের বিরুলিয়ার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হামিদ মিয়াসহ স্বপনের স্ত্রী পপি আক্তারকে ২০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার পর গত ২ জুন নিখোঁজ হয় সীমা বেগম।
এ ঘটনায় ৬ জুন স্বপনের সহযোগী সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে স্বপনের বিরুলিয়ার বাড়ির পাশে মাটি চাপা অবস্থায় সীমা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।