spot_img

― Advertisement ―

spot_img

বিশ্বম্ভরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কিশোরী কর্ণার উদ্বোধন

মোঃ আবু হায়াৎ, সুনামগঞ্জ (জেল) প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বিশ্বম্ভরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কিশোরী শিক্ষার্থীদের মাসিক চলাকালীন শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির জন্য বিশেষ কিশোরী...
প্রচ্ছদসারা বাংলাজাদুকাটায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মানববন্ধন, ড্রেজার বন্ধে এলাকাবাসীর অনুরোধ

জাদুকাটায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মানববন্ধন, ড্রেজার বন্ধে এলাকাবাসীর অনুরোধ

মোঃ আবু হায়াৎ, সুনামগঞ্জ (জেল) প্রতিনিধিঃ জাদুকাটা ও রক্তি নদীতে বেপরোয়া চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বালু পাথর পরিবহন শ্রমিক, ব্যবসায়ীদের সংগঠন। শুক্রবার বিকালে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর গ্রামে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেনে এই নদীপথের বিভিন্ন জায়গায় বিআইডব্লিউটিএ’র নামে জামালগঞ্জ ও তাহিরপুর উপজেলার চারটি স্থানে এক একটি বাল্কহেড নৌকাকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। তথাকথিত ইজারাদারদের দাবিমতে চাঁদা দিতে সম্মত না হলে পরিবহন শ্রমিকদের অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হয়।

বক্তারা অভিযোগ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্যের নাম করে প্রতি ফুট বালুর জন্য ১ টাকা হারে চাঁদা দাবি করা হয়ে থাকে। জেলার বালু ও পাথর পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত নদীপথে চাঁদাবাজির অভিযোগ বহু পুরনো। এ নিয়ে অতীতে বহু অভিযোগ, মানববন্ধন, স্মারকলিপি ও সংবাদ প্রকাশের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বলেছেন এরকম অবস্থা অব্যাহত থাকলে বাইরের কোনো ব্যবসায়ী এখানে আসা বন্ধ করে দিবেন। বিআইডব্লিউটিএ’র নিকট থেকে ইজারা নিয়ে টোলের নামে নির্ধারিত হারের চাইতে বহু বেশি চাঁদাবাজির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে কারও কোনো তদারকি নেই।

পরিবহন ও বালু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ আমলে নিয়ে সমাধানের স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নিতেও দেখা যায় না। যেহেতু নদীপথের বিভিন্ন জায়গা বিআইডব্লিউটিএ ইজারা দেয় সুতরাং এখানে তাদের দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটি ইজারা দিয়েই খালাশ। নদীপথে চলাচলকারী নৌকা যদি কোথাও নোঙর না করে অর্থাৎ চলতি নৌযান থেকে কোনো টোল নেয়ার বিধান নেই। কিন্তু বাস্তবে এই নিয়ম কেউই মানেন না।

তথাকথিত ইজারা নেয়ার উদ্দেশ্য হলো মনগড়ামত চাঁদা আদায়ের বিষয়টিকে এক ধরনের বৈধতা প্রদানের প্রয়াস মাত্র। চাঁদাবাজির ফলে বাড়তি ব্যয় শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ঘাড়ে গিয়ে পড়ে। বালু-পাথরের দাম বাড়িয়ে ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের নিকট থেকে তা উসুল করে নেয়। নদীপথের এহেন নৈরাজ্যকর অবস্থার অবসান হওয়া দরকার। 

জেলার বালুমহালগুলোর ক্ষেত্রে কেবল চাঁদাবাজিই প্রধান সমস্যা নয়। বরং বালু আহরণে পরিবেশ ধ্বংসকারী ড্রেজার মেশিনের ব্যাপক ব্যবহার হওয়া অন্যতম প্রধান সমস্যা। মানববন্ধন থেকে ড্রেজার ব্যবহারের বিরুদ্ধে কোনো কথা উচ্চারিত হতে দেখি না আমরা। এটি কি এ কারণে যে, যে ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন তারাই ড্রেজার ব্যবহারের সাথে জড়িত? অর্থাৎ একটি অন্যায় কর্মের প্রতিবাদ করতে যেয়ে তাঁরা আরেকটি অন্যায় কর্মের বিরোধিতা করার বিষয়টি চেপে গেছেন।

২৭ জুন ২০২৪ তারিখের দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার এক রিপোর্ট অনুসারে আমরা দেখতে পাই ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র দাস ড্রেজার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছি দ্রুত জাদুকাটা নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন বন্ধ করাতে এবং ড্রেজার মেশিনগুলো জব্দ করতে।’

আরও পড়ুনঃ আমতলীতে ছেলের লাশ আনতে গিয়ে মাও ফিরলেন লাশ হয়ে

মন্ত্রী মহোদয়ের এরকম কঠোর নির্দেশনার পর জেলার বালুমহালে পরিবেশ বিধ্বংসী ড্রেজার মেশিনের ব্যবহার বন্ধ করতে প্রশাসন কতোটা তৎপর হয় তা এখন দেখার বিষয়। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলতে পারি অবস্থার পরিবর্তন হবে সামান্যই।’

এলাকাবাসি বলেন, লোক দেখানো কিছু ড্রেজার জব্দ করা হবে আবার কিছুদিন পরই তা পুনরায় চালু হয়ে যাবে। এই দেখে দেখে আমরা অভ্যস্ত। অবৈধ ড্রেজার বন্ধে প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের যে ধরনের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন তা কখনও দেখা যায় না। ড্রেজার মেশিন নিয়ে চোর-পুলিশ খেলার অভিনয়ের আড়লে আমাদের গ্রামের পর গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হবে, মানুষ অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হবে, সনাতন পদ্ধতিতে বালু আহরণকারী লক্ষ শ্রমিক কর্ম হারিয়ে বেকার হবেন; এমনটিই ভবিতব্য। 

যে ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কণ্ঠ উচ্চকিত করেছেন তাঁদের প্রতি আমাদের অনুরোধ আপনারা সমভাবে ক্ষতিকর ড্রেজার মেশিন ব্যবহারের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হন। আপনাদের ভাবমূর্তি তখন গণমানুষের কাছে উজ্জ্বল হবে।