spot_img

― Advertisement ―

spot_img

উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন বেরোবি শিক্ষার্থীরা

বেরোবি প্রতিনিধি: ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশন করা শিক্ষার্থীরা অবশেষে উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভেঙেছেন।বুধবার (১৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রংপুরের বেগম...
প্রচ্ছদসারা বাংলাতেঁতুলিয়ায় এক শিক্ষকের অবৈধ বেতন উত্তোলনের অভিযোগ

তেঁতুলিয়ায় এক শিক্ষকের অবৈধ বেতন উত্তোলনের অভিযোগ

পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়াস উদ্দিন নামে এক কম্পিউটার শিক্ষক ব্যবসা শাখার শিক্ষক পদে অবৈধ বেতন উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে ৷

তবে ওই শিক্ষকের এমন কর্মকান্ডের বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ উঠলেও নীরব ভূমিকায় বিদ্যালয় কতৃপক্ষ,মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসসহ স্থানীয় প্রশাসন৷ অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে নিয়োগ নিয়ে বর্তমনানে ওই শিক্ষক নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন৷ শুধু তাই নয়,সেই শিক্ষক এবার ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব নেয়ার জন্য তদবির শুরু করছেন।

জানা গেছে,গিয়াস উদ্দিন ওই বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক পদে দীর্ঘ দিন ধরে চাকুরী করে আসছেন। তবে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের পর ২০১৮ সালের নীতিমালা অনুযায়ী কম্পিউটার বা আইসিটি শিক্ষক পদে যোগ্যতা ৩ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার কোর্সের কথা উল্লেখ রয়েছে৷ তবে ওই শিক্ষকের সেই যোগ্যতা না থাকায় তিনি তদবির করে ব্যবসায় শিক্ষায় সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেছেন বলে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

এদিকে ওই বিদ্যালয়ে সরজমিনে গিয়ে জানা যায়,গিয়াস উদ্দিন নামে ওই শিক্ষক ২০০৫ সালের পহেলা মার্চ তেঁতুলিয়া পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার শিক্ষক) পদে যোগদান করেন৷ যোগদানের প্রায় দেড় বছর পর ২০০৬ সালের জুলাই মাস থেকে তিনি নিয়মিত বেতন ভাতা পেতে শুরু করেন ৷ পরবর্তীতে ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হলে সেই পদেই তিনি ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি নিয়মিত বেতন-ভাতাসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন।

এমপিও ভুক্তি থেকে জাতীয়করণের পর বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের স্ব-স্ব পদে যোগদান করলেও গিয়াস উদ্দিন নামে ওই সহকারী শিক্ষক গত ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর কম্পিউটার শিক্ষক পদের পরিবর্তে ব্যবসায় শিক্ষায় সহকারী শিক্ষক পদে নতুন করে যোগাদান করেন৷ তবে তিনি ২০২৩ সালে যোগদান করে ২০২৪ সালের প্রকাশিত গেজেটের অজুহাতে বর্তমানে তিনি ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষক পদে বেতন ভাতা উত্তোলনের করছেন৷ অথচ সেই বিদ্যালয় ব্যবসা শাখা চালুই নেই৷

এদিকে বিদ্যালয়ে কম্পিউটার পদে যোগদান করে দীর্ঘ দিন চাকুরী করার পর হঠাৎ করে ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষক বনে যাওয়ায় এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্যতা সৃষ্টি হয়েছে। সেই বিদ্যালয়ে তিনি ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষক পদে যোগদান বা নিয়োগ পেলেও সেই বিদ্যালয়ে নেই ব্যবসা শাখা বা বিভাগ৷

বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়,ওই বিদ্যালয়ের মানবিক ও বিজ্ঞান শাখায় বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক সংকট রয়েছে। যার কারণে শিক্ষার্থীদের ফলাফলও সন্তোজনক নয়৷ এছাড়াও বিদ্যালয়ে শতাধিক কম্পিউটার ও ল্যাপটপসহ এমনকি আইসিটি ল্যাবও রয়েছে ৷ ফলে শিক্ষক সংকটের ফলে সেটিরও কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের বিপরীতে ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষক নিয়োগ দেয়ায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে তিনি প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হওয়ার জন্য তদবির শুরু করেছেন৷

এদিকে নাম প্রকাশ্যে ওই বিদ্যালায়ের শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানান,গিয়াস উদ্দিন নামে ওই শিক্ষক কম্পিউটার শিক্ষক পদে যোগদান করে দীর্ঘ দিন ধরে চাকুরী করলেও বিদ্যালয়টি বর্তমানে জাতীয়করণ হওয়ায় সেই পদে নিয়োগ পেতে হলে ৩ বছরের ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার কোর্স ও কম পক্ষে দ্বিতীয় বিভাগ উত্তীর্ণ যোগ্যতা উল্লেখ্য থাকায় সেই শিক্ষকের সেই যোগ্যতা নেই৷ ফলে তিনি তার যোগদান করার স্ব-পদের পরিবর্তে তদবির করে ব্যবসায় শিক্ষায় সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন করেছেন। তার নেই শিক্ষক নিবন্ধন তাই বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ব্যবসা শাখা না থাকাও সত্বেও বর্তমানে তিনি ব্যবসায় শাখায় শিক্ষক পদে যোগদান করে বেতন বিল উত্তোলন উত্তোলন করছে।

তারা আরও বলেন, ওই শিক্ষকের নিয়োগই বৈধ নয়, তিনি এখন প্রধান শিক্ষক ( ভারপ্রাপ্ত) হওয়ার জন্য বিভিন্ন জনের কাছে তদবির করে বেড়াচ্ছে। তিনি প্রধান শিক্ষক তো দূরের কথা সহকারী শিক্ষক হওয়ারই যোগ্য নন।

এবিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনের সাথে,তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে কম্পিউটার শিক্ষক পদে চাকুরী করে আসছি৷ পরে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হওয়ায় আমার ব্যবসায় শিক্ষায় যোগ্যতা ও বি কম পাশের সনদ থাকায় আমাকে ব্যবসায় শিক্ষায় সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন তাই আমি এখন বেতন বিল উত্তোলনের জন্য আমার কাগজপত্র সাবমিট করেছি৷

তবে ওই শিক্ষক বলেন,২০২৪ সালে প্রকাশ হওয়ায় গেজেটের নির্দেশ অনুযায়ী আমি যোগদান করেছি৷ তবে তিনি ২০২৪ সালের গেজেট দেখিয়ে বেতন উত্তোলন করলেও তিনি যোগদান করেন ২০২৩ সালে৷ প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হওয়ার জন্য তদবির বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বশীলরা যদি মনে করেন আমাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেই তাহলে আমি দায়িত্ব গ্রহন করবো। তবে আমি কোথাও লবিং বা তদবির করছি না।

এবিষয়ে তেঁতুলিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, গিয়াস উদ্দিন কম্পিউটার শিক্ষক। বিদ্যালয় থেকে শিক্ষকের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সময় তার কম্পিউটার শিক্ষক পদে তালিকা পাঠানো হলেও তিনি কি ভাবে ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষক পদে নিয়োগ পান।

আরও পড়ুনঃ সামগ্রিক সংস্কারের কথা ভাবছেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম

কম্পিউটার শিক্ষক হয়েও কিভাবে ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষক পদে বেতনভাতা উত্তোলনের বেতনসিটে প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষর করেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,মন্ত্রণালয় যেহেতু তাকে ব্যবসায় শিক্ষায় নিয়োগ চূড়ান্ত করছে তাই তিনি স্বাক্ষর করে বলে জানান তিনি৷

এবিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তেঁতুলিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ফজলে রাব্বি জানান, গিয়াস উদ্দিন নামে ওই শিক্ষকের বিষয়ে অভিযোগ করছেন অনেকেই৷ তবে বিষয়টি আমরা তদন্ত করবো৷

এদিকে তেঁতুলিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলী বলেন,আমি বিষয়টি প্রথমে জানতাম না । পরে বিষয়টি জানার পরে ওই শিক্ষকের কাগজপত্র দেখি৷ যেহেতু মন্ত্রণালয় তাকে ব্যবসায় শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছে সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় আর কিছুই করার নেই।