মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরে খাল ভাঙ্গন রোধে মানব বন্ধন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন পিয়ারাপুর গ্রামবাসী।তাদের দাবী তীর রক্ষা বাঁধ তৈরী করা। গতকাল রোববার তারা জেলা প্রসাশকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন করেন।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে খাল ভাঙন রোধে জরুরিভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন পিয়ারাপুর গ্রামবাসী। পরে জেলা প্রশাসক এর মাধ্যমে পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা বরাবর দাবিপূরণের লক্ষ্যে তারা একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রহমতখালী খালের তীব্র স্রোতে তীর ভেঙে ভিটেমাটিসহ প্রায় ৪০টি ঘর বাড়ি তলিয়ে গেছে। খালের অব্যাহত ভাঙনে বিস্তীর্ণ জনপদ বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের সংযোগ স্থানে পিয়ারাপুর ব্রিজটিও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ভূঁইয়া মোহাম্মদ জাকির হোসেন, মহিন উদ্দিন, মো. ইব্রাহিম, হেলাল উদ্দিন পাটওয়ারী ও মো. সুমন। এ ছাড়া পিয়ারাপুরসহ আশপাশের গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন।
বক্তারা বলেন, গত ৪০ বছরে রহমখালী খালের কারণে এমন ভাঙন দেখা যায়নি। শুনে আসছি একপাড় ভাঙলে অন্যপাড়ে চর জাগে। কিন্তু খালের এখন দুপাশেই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পিয়ারাপুর ব্রিজের অদূরে খাল থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে একটি প্রভাবশালী মহল অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে এখন ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে বিস্তির্ণ জনপদ বিলীন হয়ে যাবে। এমন অবস্থায় দ্রুত ব্লক স্থাপন করে বাঁধ নির্মাণ করা না হলে খাল আশপাশের বাড়িঘরগুলোর অস্তীত্ব বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আশুলিয়ায় ৭৯ পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরের পর বছর পিয়ারাপুরের ‘মধ্য চর’ এলাকায় অসংখ্য পরিবার বসবাস করে আসছে। প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে কেউ না কেউ তাদের ভিটেমাটি হারাতে হয়। এ ওয়াপদা খালের গর্ভে। গত শুক্রবার ও শনিবার দুদিনে ওয়াপদা খালের তীব্র স্রোতে ‘মধ্যে চর’ এলাকায় বসবাসরত ১২টি বসত বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। প্রতিটি পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। টুমচর এলাকায় যেভাবে খালের পাশে সুরক্ষিত তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ঠিক এখান দিয়ে তীর রক্ষা বাঁধ দিলে খালের ভাঙন রোধ হবে। নয়তো এ খালের ভাঙন অব্যাহত থাকবে।
ক্ষতিগ্রস্ত আবদুল মালেক, মো. দুলাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, রাজন, আলেয়া বেগম, অছুরা খাতুন জানান, দুদিন পূর্বে আমাদের এখানে সাজানো-গোছানো সংসার ছিল। বাড়িঘর ছিল। রান্নার ঘর ছিল। উঠান ছিল। গাছপালা ছিল। সবাই সুখদুঃখে মিলেমিশে বসবাস করছি। বছরের পর বছর আমরা এখানে থেকেছি। এ রাক্ষসী খালের পেটে আমাদের সবকিছু বিলীন হয়ে গেছে। আমরা এখন বড়ই নিঃস্ব। আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আমাদের প্রয়োজন এখন পূর্ণ বাসস্থানের। পরিবার-পরিজন মানবেতর জীবনযাপন করছি।