বগুড়া প্রতিনিধিঃ সরকারি বেশ কয়েকটি প্রকল্পের টাকা আত্বসাতের অভিযোগ উঠেছে বগুড়া শেরপুর উপজেলার শাহ- বন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে।দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে এই জামায়াতের চেয়ারম্যানের ওপর অনাস্থা প্রস্তাব এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ৮ জন ইউপি সদস্য।
অভিযোগে বলা হয়,জনসেবামূলক কাজ ও এলাকার উন্নয়নের জন্য এবং স্বচ্ছ জবাবদিহীতা,সুশাসন,সমাজসেবামূলক কাজ করতে ব্যর্থতা সহ চেয়ারম্যান ও সচিবের দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন।
চেয়ারম্যানের দুর্নীতি জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান,ভূমি হস্তান্তর কর ১% প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তোলনকৃত টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয় নি এবং এই টাকার কোন প্রকার হিসাব প্রদান করেনি।যার পরিমাণ আমাদের জানামতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে আঠারো লক্ষ ছত্রিশ হাজার টাকা,২০২২-২৩ অর্থবছরে বত্রিশ লক্ষ ঊনআশি হাজার আটশত টাকা, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঊনত্রিশ লক্ষ আট হাজার টাকা সহ মোট-আশি লক্ষ তেইশ হাজার আটশত টাকা।তিনি উক্ত টাকায় কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে মর্মে আমাদের জানা নাই।
চেয়ারম্যানের দুর্নীতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান,বসতবাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স ও ব্যবসা-বাণিজ্য ট্যাক্সসহ তিন অর্থ-বছরের প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এছাড়া গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখের পূর্বে ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক সভা করা হয় নাই।ইউনিয়ন পরিষদের কোনো স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়নি কিংবা কমিটি গঠন করলেও তা গোপন আছে, আমরা সে বিষয়ে অবগত নই।পরিষদের কোনো বরাদ ও প্রকল্প সম্পর্কে আমাদের অবহিত করা হয় না।
এছাড়া ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ সোহেল রানা জানান,ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের আজ অবদি তেরো মাসের সম্মানী ভাতা বাঁকী আছে।যা পরিষধের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান কোন চেষ্টা করেনা।আমরা তার দুর্নীতির কথা বললো আমাদেরকে বিভিন্ন সময়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ প্রাণ-নাশের হুমকি প্রদান করেছে।
এ বিষয়গুলো নিয়ে চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও তৎকালীন সচিবের সাথে কথা বলতে গেলে আমাদের সাথে চেয়ারম্যান বা সচিব এ বিষয়ে কোনো কথা বলে নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সুমন জিহাদী জানান,শাহ-বন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিবের নামে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি।তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য,আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছায়া সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের সাবেক বগুড়া জেলা পূর্ব শাখার সভাপতি ছিলেন।বর্তমান জামায়াতের বগুড়া অঞ্চল টিমের সদস্য হিসাবে কাজ করছে।ইউপি নির্বাচনে তিনি জামায়াতে ইসলামী থেকে নির্বাচন নির্বাচনে বিজয়ী লাভ করেন।উল্লেখিত অভিযোগ ছাড়াও এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের কথা বলেছে।
আরও পড়ুনঃ তালা ভেঙ্গে মারধরে ছাত্রলীগ নেতা পিস্তল শামীমের মৃত্যু, ছাত্রদলের ৫ জন শনাক্ত
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াত শিবিরের একাধিক নেতা বলেন,আবুল কলাম আজাদ জামায়াতে ইসলামীর মান ক্ষুণ্ণ করছে।তার আচার-আচরণ কুকুরের চেয়েও নিকৃষ্ট।জামায়াতের অনেক নেতা কর্মীর সাথে আবুল কলাম ছিনিমিনি খেলেছে।এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান হয়ার সুবাদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪ র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অর্থ লুট করেছে।তাছাড়া তিনি শিক্ষক হলেও প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে মাসিক বেতন তুলছেন।
জামায়াতের জেলা ও উপজেলার অধিকাংশ নেতা কর্মীরা আবুল কালাম আজাদের দুর্নীতির কথা জানলেও কোন ক্ষমতার বলে এই নেতা জামায়াতে ইসলামীতে টিকে আছে তা প্রশ্ন রয়েছে হাজারো জামায়াত ভক্তের মনে…