
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ভারতের নাগরিক হয়েও পাবনা সদর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি—এমন অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, শ্বশুরের নামে লিজ নেওয়া সরকারি জমি জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের নামে ভোগদখল করার চেষ্টারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী পাবনা সদর উপজেলার বালিয়াহালট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। নথি অনুযায়ী তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার দক্ষিণ ব্যারাকপুর শহরের দমদমের সূর্যসেন পল্লির বাসিন্দা এবং নির্মল কুমারের ছেলে। তার ভারতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ০০০০/০০৮০২/৭৬৩৯৭ এবং আধার কার্ড নম্বর ৪০৫০২২৩৪৩৩৫১। তবে একই সঙ্গে তিনি পাবনা শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবেও পরিচিত।
গত ৩১ আগস্ট এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন সুখ রঞ্জন চক্রবর্তীর শ্যালক সুমন কুমার রায়। অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের চাকরিবিধি উপেক্ষা করেই তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন। অথচ তিনি ভারতের নাগরিক, সেখানেই তার জমিজমা ও ফ্ল্যাটবাড়ি রয়েছে। তার স্ত্রী ও বড় ছেলে ভারতে বসবাস করেন। ছোট ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় ভাতা পেতে তাকে সঙ্গে নিয়ে পাবনায় থাকেন। মাঝেমধ্যে ১৫ দিন থেকে এক মাস ছুটি নিয়ে ভারতে চলে যান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী শ্বশুর দীপক কুমার রায়ের নামে লিজ নেওয়া সরকারি সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের নামে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে শ্যালক সুমন কুমার রায় বলেন, “আমার বাবা সরকারি জমি লিজ নিয়ে বসবাস করতেন। তার মৃত্যুর পর আমার মায়ের নামে লিজ নবায়ন হয়। মা মারা যাওয়ার পর কাউকে না জানিয়ে আমার বোনকে একমাত্র উত্তরসূরি বানিয়ে জেলা প্রশাসক ও পৌরসভায় আবেদন করেছে। এখন আমার বাড়িতে বসবাস করেও আমাকে উচ্ছেদ করতে চাইছে।”
আরও পড়ুনঃ মানুষের দোয়ার কারণেই গুম থেকে জীবিত ফিরেছি: হুম্মাম কাদের চৌধুরী
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর জানান, “আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে এবং কাগজপত্রও পেয়েছি। ইতোমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযুক্ত সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এসব অভিযোগ মিথ্যা। কাগজপত্র বানানো যায়। আমার স্ত্রী-সন্তানরা আমার ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা করে ভারতে চলে গেছে। তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। তদন্ত হলে সব ডকুমেন্টস দেখাতে পারব।”
পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি, তবে এখনও লিখিত অভিযোগ হাতে পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”