
মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ, সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টারঃ ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘উচ্চতর শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে গবেষণার উপর জোর দিতে হবে। বর্তমান প্রযুক্তিগত শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে অগ্রসর হতে হলে মাদরাসা শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষক ও অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের গবেষণামূলক কাজ করতে হবে।’
রোববার (২ জুন) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের অডিটোরিয়ামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বই পড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, মেধা বৃত্তি, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান এবং ফাজিল ও কামিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ। সঞ্চালনা করেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম।
আরও পড়ুনঃ বেনজীর অবস্থান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন, তাহলে দেশটা চালাচ্ছে কে প্রশ্ন আবদুস সালামের
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাক্ষেত্রে গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে দ্বীন শিক্ষার উন্নয়নে আলেম-ওলামাদের শত বছরের দাবি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের সকল মাদরাসা প্রতিষ্ঠানের আলেমগণের সমন্বয়ে বর্তমান বিজ্ঞানসম্মত ও প্রযুক্তিগত জীবন ব্যবস্থা বিনির্মাণে বৈশ্বিক নানা ধরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়কে কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, কিছু ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও গোষ্ঠী দ্বীনকে ব্যবহার করে নিজেদের খারাপ স্বার্থ উদ্ধার করতে চায়। যাদের দ্বীনের জ্ঞান নেই তারাই সমালোচনা করে। দ্বীন শিক্ষাকে আলেমগণ যেভাবে পরিচালনা করছে, পাঠ্যবইয়ে আমরা তা রিভিউ করছি। দ্বীন শিক্ষার সঙ্গে যা সাংঘর্ষিক তা থেকে বিরত থাকতে হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী ও কর্মোপযোগী করে তোলা। আমাদের সবার উচিত শিক্ষার্থীদের দক্ষতামুখী ও দক্ষতানির্ভর করে তোলা।
সভাপতির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, যারা মাদরাসা থেকে অবসর নিয়েছেন তাদের শিক্ষা প্রদান শুধু এখন মাদরাসা শ্রেণীকক্ষেই সীমাবদ্ধ নয় বরং তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন বিশ্বব্যাপী। তারা তাদের অর্জিত দ্বীন শিক্ষাকে সমগ্র বিশ্বের ছড়িয়ে গোটা পৃথিবীকে আলোকিত করতে পারেন অনায়াসেই। মেধাভিত্তিক বৃত্তির পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদেরকেও বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ শিক্ষার্থী বর্তমানে অধ্যয়নরত। ইতোমধ্যে দুই লক্ষ বায়ান্ন হাজার ছয়শত ঊননব্বই জন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়েছে, যারা মূল সনদ পায়নি। আমরা মূল সনদ দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। খুব শীঘ্রই সমাবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল সনদ দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ও ধর্ম মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী।
এছাড়া ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, ঢাকা মহানগরের ফাজিল ও কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বই পড়া প্রতিযোগিতার বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি প্রাপ্ত, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীগণ এবং ফাজিল ও কামিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।