spot_img

― Advertisement ―

spot_img

ত্রিশালে সেনাপ্রধানের স্বপ্নের অলিম্পিক কমপ্লেক্স নির্মিত হবে ১৭৩ একর জায়গায়

আবুল কালাম আজাদ, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধিঃ দেশের ক্রীড়াঙ্গনে যুগান্তকারী পরিবর্তনের লক্ষ্যে ময়মনসিংহের ত্রিশালে নির্মিত হতে যাচ্ছে মাল্টি-স্পোর্টস অলিম্পিক কমপ্লেক্স। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সভাপতি...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসজবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা: জড়িতদের শাস্তির দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন 

জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা: জড়িতদের শাস্তির দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন 

আবু বকর সিদ্দিক, জাবি প্রতিনিধি ঃ

‘এটা সুইসাইড নয়, এটা মার্ডার। টেকনিক্যাল মার্ডার’ সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরকে দায়ী করে এভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের(জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা। এ ঘটনায় আজ প্রতিবাদ জানিয়ে মানবন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।

রবিবার(১৭ মার্চ) বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন করেন তারা৷ মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক  হাসিব জামানের সঞ্চালনায় বক্তারা অবন্তিকার ঘটনাকে একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড উল্লেখ করে ঘটনার পিছনে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতি ও তাদের স্বেচ্ছাচারী মনোভাব পরিহার করার দাবি জানান৷ 

ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের(একাংশ) সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন ‘অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড৷ তাকে দীর্ঘদিন ধরে সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বারা মানসিক টর্চার করা হয়েছে৷ এ ধরনের ঘটনা দ্বারা প্রমাণিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আসলে নিরাপদ নয়৷ দেশে নারীদের ক্ষমতায়নের কথা বলা হলেও নারীরা এখনও নিরাপদ নয়। তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসেও যেভাবে নিপীড়নের শিকার হতে হয়, তা আমাদের জন্য লজ্জাজনক৷ আমরা চাই যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে তাদের সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হোক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’ 

সাধারণ সম্পাদক ইমন বলেন,’আমার এখানে দাঁড়িয়েছি অবন্তিকার জন্য এবং আরো নাম না জানা অনেক অবন্তিকার জন্য, যাদের ঘটনা এখনো সামনে আসেনি৷ অবন্তিকার ঘটনাটি আত্মহত্যা নয় বরং একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। অবন্তিকার নিপীড়নের পর যে হত্যাকান্ত হয়েছে এর পিছনে দায়ী আছে একটা কাঠামোগত অব্যবস্থাপনা এবং এখানে একটি শক্তিশালী বলয় কাজ করে, যাদের ছত্রছায়ায় নিপীড়ক তৈরি হয়।’  

এসময় মানববন্ধনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন,একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কেনো নিজ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। কেনো তাকে আত্মহত্যা করে বিচার চাইতে হবে। শিক্ষার্থীরা আরো বলেন অবিলম্বে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে যাতে আর কোনো মায়ের কোল এভাবে খালি না হয়।

উল্লেখ্য যে গত ১৫ মার্চ জবির ফাইরুজ অবন্তিকা নামে এক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। মৃত্যুর আগে দেয়া দীর্ঘ একটি পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করেছেন।

অবন্তিকা ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘আমি যদি কখনও সুইসাইড করে মারা যাই, তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন ও অনলাইনে থ্রেটের (হুমকি) ওপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানানভাবে ভয় দেখায়, আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার।’তিনি আরও লেখেন, ‘আম্মান আমাকে সেক্সুয়ালি এবিউজিভ কমেন্ট করায় আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেয়ার জন্য দ্বীন ইসলামের শরণাপন্ন করায়। আর দ্বীন ইসলাম আমাকে তখন প্রক্টর অফিসে একা ডেকে নারী জাতীয় গালিগালাজ করে।’

অবন্তিকার আত্মহত্যার তথ্য ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত থেকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীরা সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দীকির বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ তোলেন। পরে দোষী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

শনিবার (১৬ মার্চ) বিকেল তিনটায় আবারো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে তারা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

শুক্রবার দিবাগত রাতে (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন উপাচার্য সাদেকা হালিম। তিনি আশ্বাস দেন, ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করার। এ সময় অবন্তিকার অভিযোগপত্র তাকে দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আম্মানকে সাময়িক বহিষ্কার ও তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই সঙ্গে আম্মানকে সহায়তাকারী সহকারী অধ্যাপক দ্বীন ইসলামকেও সাময়িক বরখাস্ত করে আটক এর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মা তাহমিনা বেগম দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে বলেন, ‘গত রোজায় স্বামীকে হারালাম। এবার মেয়েকে। মেয়ে আমার বিচারক হতে চেয়েছিল। কিন্তু ওরা বাঁচতে দিল না।