মোঃ তরিকুল মোল্লা, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) বিগত কয়েক বছরে সংঘটিত বিভিন্ন আর্থিক, প্রশাসনিক ও একাডেমিক অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তের উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ কমিশন গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজী রফিকুল ইসলামের নির্দেশে গঠিত ৪৯ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিশন উক্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই কমিশন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানি, র্যাগিং, আসন-বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগগুলো তদন্ত করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস এম হেমায়েত জাহান স্বাক্ষরিত আদেশে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিশেষ এই কমিশনের চেয়ারম্যান করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস এম হেমায়েত জাহানকে। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক, হল প্রাধ্যক্ষ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রক্টরসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের এই কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমিশনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত সব ধরনের অনিয়মের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করে সুপারিশমালা জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সাব-কমিশন গঠন করার ক্ষমতাও এই কমিশনকে প্রদান করা হয়েছে।
দাপ্তরিক নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে এই কমিশন গঠন করা হয়েছে। সেই সময় দেশব্যাপী আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ববর্তী সরকার পদত্যাগ করে, এবং এরপর থেকেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়।
আরও পড়ুনঃ ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে হ্যান্ডব্যাগ হারিয়ে সাধারণ ডায়েরি
কমিশনকে যে বিষয়গুলো তদন্ত করতে বলা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে:
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানি, র্যাগিং, গেস্ট রুম টর্চার, সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি।
২. বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক এবং কর্মচারীদের শারিরিক, মানসিক ও প্রশাসনিক হয়রানি।
৩. নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধার অবমূল্যায়নের ফলে কোনো চাকরিপ্রার্থী আত্মহত্যার প্ররোচনা পেয়েছে কি না, সেই বিষয়ে তদন্ত।
৪. অনিয়মের কারণে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকুরিচ্যুতি এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
৫. নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রশাসনিক অনিয়ম এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ।
৬. ভর্তি ও সেমিস্টার পরীক্ষায় অনিয়ম ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা।
৭. বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ ও টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি এবং আর্থিক দুর্নীতি।
কমিশনের চেয়ারম্যান এস এম হেমায়েত জাহান বলেন, “সবার পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্বে সংঘটিত সকল অপকর্মের সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এগুলো আর না ঘটে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”