spot_img

― Advertisement ―

spot_img

‘জুলাই আন্দোলনে নারী’ কর্মসূচিতে উপেক্ষিত জাবির আন্দোলনকারী নারীরা

মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সংস্কৃতি সংগঠনগুলোর সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে ‘জুলাই আন্দোলনে নারী’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনীতে উপেক্ষিতই রয়ে...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসজাবিতে লিও ক্লাবের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী

জাবিতে লিও ক্লাবের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী

মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, জাবি প্রতিনিধিঃ শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলের পার্শ্ববর্তী লেকের পাশে আবর্জনার ভাগাড় পরিস্কার করে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিও ক্লাব। ক্লাবটির উদ্যোগে  শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের সহযোগিতায় ৩৬০০ বর্গফুট আয়তাকার জায়গায় প্রায় শতাধিক নিম গাছসহ বেশ কিছু ফলফলাদির গাছ লাগানো হয়েছে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় বৃক্ষরোপন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান।

এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ সুস্থ ও নির্মল রাখতে বৃক্ষরোপণের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের সকলের বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করা উচিত  একেকটি গাছ অক্সিজেনের ফ্যাক্টরি। শুধু গাছ লাগালেই চলবে না, এর যত্নও নিতে হবে- যাতে গাছগুলো বেঁচে থাকে। তিনি আরোও  বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্য এই গাছপালা ও প্রাকৃতিক পরিবেশ। এ গাছগুলো বড় হলে ক্যাম্পাসের নির্মল ও মনোরম পরিবেশ আরও দৃষ্টিনন্দন হবে।

শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. খো. লুৎফুল এলাহী লিও ক্লাবের সভাপতি  ও সাধারন সম্পাদকে এমন উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন প্রত্যেকটা দেশে মোট ভূমির অন্তত ২৫ ভাগ গাছপালা থাকা উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে বনভূমির পরিমান বৃদ্ধি করতে সেরকম কোনো উদ্যোগ নেই। একদিকে গাছপালা যেমন ছায়া দানকারী, জীবন রক্ষাকারী তেমনি অন্যদিকে গাছপালা আমাদের ফুল-ফল ও জীবনরক্ষকারী ঔষধি প্রদান করে। লিও ক্লাবের উদ্যোগে যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হচ্ছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। পুরো ক্যাম্পাসে  বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে,এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাদিকুর রহমান বলেন, লিও ক্লাব ও প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. খো. লুৎফুল এলাহী স্যারের প্রচেষ্টাতে লেক তার পুর্বের অবস্থান ফিরে পেয়েছে। এখানে বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে হলের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে। গত এক বছর ধরে ময়লা আবর্জনার কারণে এই অংশ দিয়ে হাটতে যেমন কষ্ট হচ্ছিলো। একইভাবে ময়লা পানিতে জন্ম নেয়া মশার অত্যাচারে হলে টিকে থাকা কষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো। অবশেষে লিও ক্লাবের প্রচেষ্টাতে ময়লার ভাগাড় সরানো ও বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে মনে করি।

লিও ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল মাহমুদ বলেন, প্রকৃতির মাঝে আমার বাস, ফল চাই বারো মাস। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর গাছপালা থাকলেও ফলদ বৃক্ষের পরিমাণ তুলনামূলক কম। ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের ফলের চাহিদা কিছুটা হলেও মিটাতে সক্ষম হবে আমাদের এই উদ্যোগ। প্রায় ২০ ধরনের ফল গাছ রোপণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে বৃক্ষ রোপণ পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের ময়লা ব্যবস্থাপনার একটি টেকসই সমাধান করার জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। এসব কাজে লিওরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও সহযোগিতা পেলে কাজগুলো সুদূরপ্রসারী হবে।

বৃক্ষরোপন কর্মসূচি সম্পর্কে লিও ক্লাবের সভাপতি আয়শা সিদ্দিকা বৃষ্টি বলেন, সবুজের নগরী হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বৃক্ষ নিধনের ফলে পরিবেশে  ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। যার ফলশ্রুতিতে গতবছর আমরা তীব্র তাপদাহ লক্ষ করেছি। বৃক্ষরোপণের এই উপযুক্ত সময়ে আমরা ক্যাম্পাসের প্রান প্রকৃতি ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে লিও ক্লাবের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।শুধু  বৃক্ষরোপণ নই পরবর্তী সময়ে আমাদের প্রতিনিধিরা গাছগুলোর যত্নে কাজ করবেন। আমরা পুর্বের ন্যায় আমাদের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি অব্যহত রাখবো ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে যাবো।

আরও পড়ুনঃ খুবিতে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন, উপস্থিতি ৭১.৮১%

এছাড়াও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ,শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. খো. লুৎফুল এলাহী, তাজউদ্দিন হলের হাউস টিউটর সহযোগী অধ্যাপক মনির উদ্দিন শিকদার, লিও ক্লাব অফ জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ওয়ান প্লাসের প্রেসিডেন্ট আয়শা সিদ্দিকা বৃষ্টি, সেক্রেটারি আল মাহমুদ, সেক্রেটারি (এডমিন) মাহিব আহমেদ চৌধুরী, ও প্রোগ্রামের কনভেনর রাফিদ উল্লাহ। 

উল্লেখ্য লেকের পার্শ্ববর্তী স্থানটি দীর্ঘদিন যাবৎ ময়লার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিলো । ফলে ধীরে ধীরে লেকটি একটি ডোবায় বা পরিত্যাক্ত ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিলো। শিক্ষার্থীদের  দীর্ঘদীনের অভিযোগ ছিলো  লেকটি থেকে প্রতিনিয়ত ময়লা আবর্জনার গন্ধ ছড়াচ্ছে। পানি জমে জমে তা মশার পরিমাণ বাড়াচ্ছে। 

প্রসঙ্গত,লিও ক্লাব ইতোপূর্বে  ক্যাম্পাসে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখাতে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি গ্রহন ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন স্থানে প্রশাসন কতৃক নির্ধারিত রিকশা ভাড়ার চার্ট  টাঙ্গিয়ে সেটা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।  লিও ক্লাব লায়ন্স ইন্টারন্যাশনালের যুব সংগঠন। লিও শব্দের অর্থ হলো নেতৃত্ব, দক্ষতা, সুযোগ। লিও ক্লাব তরুণদের সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নেতৃত্ব বিকাশে সহযোগিতা করে। লিও ক্লাব লায়ন্স ক্লাবের ফান্ডের ওপর নির্ভরশীল। লিও ক্লাবের মেম্বাররা লিও নামে পরিচিত হয়। তারা সমাজে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, দারিদ্র্য বিমোচন, আত্মোন্নয়ন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে।