তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ বরাদ্দকৃত কক্ষ ব্যবহারের দাবিতে আমরণ অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চারুকলা বিভাগের দুই ছাত্রী।
সোমবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ৩টা থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে তারা। পরে রাত ৯টার দিকে দুই ছাত্রী অসুস্থ হলে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। এর আগে তারা সকাল ৯টা থেকে একই স্থানে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এদিকে ফোন কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ আগামীকাল মঙ্গলবার আলোচনার মাধ্যমে তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা তাতে রাজি হননি। উপাচার্যের এ আশ্বাসকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে নির্দিষ্ট সমাধান না দেওয়া পর্যন্ত তারা আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
জানা যায়, গত ৮ অক্টোবর চারুকলা বিভাগকে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের চতুর্থ তলায় ২৩টি ও পঞ্চম তলায় ১টি কক্ষসহ মোট ২৪টি কক্ষ বরাদ্দ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগকে পঞ্চম তলায় ১৫টি ও ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগকে একই তলার ১৭টি কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়।
চারুকলার শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘প্রশাসন কর্তৃক কক্ষ বরাদ্দ পেলেও পূর্ব থেকেই অন্যায়ভাবে দখল করে রেখেছে ফোকলোর স্টাডিজ ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ। প্রশাসন অতিদ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েও কোনো সুরাহা না করায় গতকাল থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। প্রশাসন অনেকভাবে আশস্ত করলেও আমরা কোনো দৃশ্যমান ফলাফল না পেয়ে বাধ্য হয়ে এখানে এসেছি। আমাদের পরীক্ষা দেওয়ার মতো কোনো রুম নেই। আমাদের ক্লাসের পর ক্লাস হয়েছে বাতিল হয়েছে। বিভাগের সভাপতিকে বসতে দেওয়ার মতো রুম পাচ্ছি না। আমাদেরকে কর্তৃপক্ষ কক্ষ বরাদ্দ দিলেও অন্য ২টি বিভাগ তা দখলে রাখায় উঠতে পাচ্ছি না। এটি সমাধানের জন্য প্রশাসনের কোনো সাড়া না পেয়ে আমরা অনশনে বসেছি। আমরা আমাদের দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে উঠবো না।’
আরও পড়ুনঃ মনোহরদীতে ঘরে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হ’ত্যা, আহত-১
এ বিষয়ে চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অবশ্যই যৌক্তিক। কর্তৃপক্ষ থেকে বরাদ্দকৃত কক্ষে ক্লাস করার সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, ‘ছোট একটি সমস্যাকে বড় করে তোলা হচ্ছে। আমরা সবগুলো বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে বসে কক্ষ বরাদ্দের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু বরাদ্দকৃত কক্ষে না গিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টির সমাধান শিক্ষকদের হাতেই রয়েছে বলে আমি মনে করি। তারা শিক্ষার্থীদের বললে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষে যেতে শিক্ষার্থীরা বাধ্য। উপাচার্যের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে আমি ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সভাপতির সঙ্গেও আলাদাভাবে কথা বলেছি। তারপরও নির্দেশ না মেনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এখন কেউ যদি গায়ের জোরে নির্দেশ অমান্য করে, তাহলে আমাদের করার কী থাকে, আমরা তো আর পুলিশ প্রশাসন না। আমার মনে হয়, উপাচার্যকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার জন্য পরিকল্পিতভাবেই এসব করা হচ্ছে।’