তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুলাই আন্দোলনের গণহত্যার দায়ে অভিযুক্তদের বিচারসহ ৩ দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর একটার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, চব্বিশের জুলাইয়ে আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ছাত্র-জনতার অংশ নিয়েছে। যে আন্দোলনে অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা ও রক্তের বিনিময়ে ১৬ বছরের স্বৈরাচারী ও গণহত্যাকারী আওয়ামী সরকারের পতন হয়। ছাত্র-জনতার উপর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার যখন নির্বিচার গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একটি পক্ষ স্বৈরাচারের সহযোগী হিসেবে প্রকাশ্য কার্যক্রম পরিচালনা করে। আন্দোলন বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনসহ ৪ আগস্ট ছাত্রদের বিরুদ্ধে মিছিল করেছে। সেখান থেকে তারা নিজেদেরকে 'পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার কর্মী' ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন প্রতিরোধ ও আন্দোলনকারীদের উপর প্রতিশোধের ঘোষণা দেয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণহত্যাকারী সরকারের বিচার শুরু করলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বৈরাচারের দোসর ও সহযোগীদের তথ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরিত হয়েছে। এই মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে।
এছাড়া আরও বলা হয়, বর্তমানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পদলেহনকারী একটি গোষ্ঠী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এজন্য তারা সংঘবদ্ধভাবে দেশবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদের দোসররা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশ নিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি হওয়ার সুযোগ খুঁজছে৷ তাদেরকে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে ছাত্র-সমাজ কোনভাবেই মেনে নেবে না। এই নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের নামান্তর। যা জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের সাথে সম্পূর্ণভাবে সাংঘর্ষিক এবং জুলাই বিপ্লবকে অবমাননার শামিল।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মীপুরে পৃথক দুর্ঘটনায় কৃষক দল নেতাসহ ২ জনের মৃত্যু
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবিগুলো হলো- দ্রুত সময়ে গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদ ও সহযোগীদের যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের জায়গা দেওয়া যাবে না। গণহত্যার বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, 'স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবিগুলো আমাদেরও প্রত্যাশার দাবি। তোমাদের পক্ষ থেকে এরূপ দাবি আশায় তোমরা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। তোমরা তোমাদের দাবি উত্থাপন করেছো। এখন প্রশাসন থেকে সামর্থ্যনুযায়ী আমরা কাজ করে যাবো।'
এর আগে স্মারকলিপিতে উল্লেখিত ৩দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।