ওমর ফারুক জিলন, জবি প্রতিনিধিঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে মেহেদী হাসান হিমেলকে আহ্বায়ক এবং শামসুল আরেফিনকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটি ঘোষণার পরপরই পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, গেট লক এবং টায়ারে আগুন দিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এতে ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এক শিক্ষার্থী ফারুক হোসাইন মন্তব্য করেন, "ক্যাম্পাস কি তোমাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি যে গেট লক করে কর্মসূচি দিচ্ছ?" অন্য শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ করে দলীয় ক্ষমতা দেখানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।"

ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টও এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একে এম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি এক বিবৃতিতে বলেছেন, "ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করা প্রশাসনের দায়িত্ব।"

ছাত্র ফ্রন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, "ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অতীতে আমরা ছাত্রলীগের দাপট দেখেছি। এখন ছাত্রদল যেন একই পথে না হাঁটে, তা নিশ্চিত করতে হবে।"

আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মীপুরে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ‘ছিনতাই’: ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

জানা গেছে, পদবঞ্চিতদের মধ্যে বেশিরভাগই বহিরাগত, অছাত্র এবং দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। তাদের মধ্যে আছেন শাখা ছাত্রদলের সাবেক নেতারা, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী, এবং পুরান ঢাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, দলীয় সাংগঠনিক কাঠামো মেনে এবং উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এই কমিটি আগামীর নেতৃত্বে একটি গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার পথে কাজ করবে।

এই পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।