
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ বিভাগের নাম পরিবর্তন ইস্যুতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা দ্বিধাবিভক্ত অবস্থানে রয়েছেন। এক পক্ষ বিভাগের নাম অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে থাকলেও, অন্য পক্ষ বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় ‘সচেতন শিক্ষার্থী’ ব্যানারে নাম অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন শুরু করে একদল শিক্ষার্থী। কিছুক্ষণ পর ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে অপরপক্ষ নাম পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে।
নাম পরিবর্তনের বিপক্ষে থাকা শিক্ষার্থীরা মনে করেন, দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ নামে এই বিষয়টি পড়ানো হয়। সরকারি চাকরির নিয়োগ, বিশেষ করে বিসিএস ও পিএসসির ক্ষেত্রে এই নামে বেশি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
অন্যদিকে, নাম পরিবর্তনের পক্ষে থাকা শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তারা ভর্তি হওয়ার সময় ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি’ নামে ভর্তি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে জানতে পারেন, বিভাগের নাম ‘জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’। এ বিষয়ে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। চাকরির বাজারে সমস্যার আশঙ্কায় তারা এখন নাম পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
নাম পরিবর্তনের বিপক্ষে থাকা শিক্ষার্থী ফারিহা বলেন, “পিএসসিতে জিওগ্রাফি নিবন্ধিত একটি বিষয় যার কোড রয়েছে (৩১১)। কিন্তু এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বা শুধু এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স পিএসসিতে স্বীকৃত নয়। ফলে বিসিএস (শিক্ষা)সহ বিভিন্ন সরকারি চাকরির সুযোগ নষ্ট হবে।”
অন্যদিকে, নাম পরিবর্তনের পক্ষে থাকা শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “নাম পরিবর্তনের জন্য পাঁচ মাস ধরে প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে। প্রশাসন যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আমরা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ করব এবং স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা করব।”
আরও পড়ুনঃ চিলমারীতে ৫ কেজি গাঁজা ও ৩০০ পিস ইয়াবাসহ যুবক গ্রেপ্তার
বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক বিপুল রায় বলেন, “শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে গেলে বিভাগের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট হবে। তারা ইতোমধ্যে তাদের দাবি জানিয়ে দিয়েছে, তাই আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। একাডেমিক কাউন্সিলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, “বিভাগের নাম পরিবর্তনের একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আছে। কেউ চাইলেই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আজ বিকেল ৩টায় একাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত রয়েছে, সেখানে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
শিক্ষার্থীদের এই বিভক্ত অবস্থানের কারণে বিভাগের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এখন প্রশাসনের সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে আছে সবাই।