মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ ভালোবাসা দিবসে অশ্লীলতা রোধে সচেতনতামূলক উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী কলেজ দ্বীনি সোসাইটি। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১২টা থেকে কলেজ প্রাঙ্গণে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দ্বীনি সোসাইটির সদস্যরা কলেজের প্রশাসনিক ভবন থেকে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তারা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
প্রচারণার সময় সংগঠনের সদস্য তানিম বলেন, "ভালোবাসা পবিত্র, তবে এটি অপব্যবহার করা এখন সাধারণ প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। প্রেমের বিয়ের কারণে দেশে তালাকের হার বাড়ছে, যা ১৪ ফেব্রুয়ারির মতো দিবসের প্রভাবে বাড়ছে। এমনকি গর্ভপাতের হার বৃদ্ধিতেও এই দিবসের ভূমিকা রয়েছে। আমরা পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুসরণ করতে গিয়ে আমাদের নৈতিকতা হারাচ্ছি। ভালোবাসা বছরের প্রতিটি দিনের জন্য, তবে ১৪ ফেব্রুয়ারির নামে যে অশ্লীলতা ছড়ানো হয়, তা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি।"
রাজশাহী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দুর্জয় বলেন, "ভালোবাসা খারাপ কিছু নয়, ভালোবাসা দিবস উদযাপনও দোষের কিছু নয়। তবে কিছু মানুষ এ দিনটিকে অশ্লীলতার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে, যা আমাদের সমাজের জন্য ক্ষতিকর। দ্বীনি সোসাইটির এই উদ্যোগ যদি অশ্লীলতা রোধে কার্যকর হয়, তবে তা সবার জন্য কল্যাণকর হবে।"
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্রী রুকাইয়া সুলতানা বলেন, "ভালোবাসা হালাল, তবে অবিবাহিত ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠা সম্পূর্ণ হারাম। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন পার্ক ও রেস্টুরেন্টের চিত্র দেখলেই বোঝা যায়, আমাদের সমাজ কোন পথে এগোচ্ছে। এই ধরনের সম্পর্ক ইহকাল ও পরকালের জন্য ক্ষতিকর। দ্বীনি সোসাইটির প্রচেষ্টায় আমি নিজেও কাজ করতে চাই, কারণ আমরা শিক্ষার্থীরাই দেশের ভবিষ্যৎ, অথচ অনেক শিক্ষার্থী প্রেমের কারণে বিপথে চলে যাচ্ছে।"
আরও পড়ুনঃ রামগঞ্জে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা
দ্বীনি সোসাইটির তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, "ভালোবাসার নামে অশ্লীলতা রোধে এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। যদি আগে থেকেই এ ধরনের কার্যক্রম চালু করা হতো, তাহলে অনেকেই সতর্ক হতে পারত। এই কার্যক্রম শুধু রাজশাহী কলেজ নয়, পুরো দেশজুড়ে পরিচালনা করা দরকার।"
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী বলেন, "দ্বীনি সোসাইটির উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা ছড়ানোর সময় অবশ্যই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। শুধু ১৪ ফেব্রুয়ারি নয়, নৈতিকতার প্রসারে ভবিষ্যতেও তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা উচিত।"
রাজশাহী কলেজ দ্বীনি সোসাইটির এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা যায়।