
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে এবং বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য আয়োজন করেছে তৃতীয়বারের মতো কুহেলিকা উৎসব। এবারের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার উন্মেষ ঘটাতে ৪৫টি বৈচিত্র্যময় স্টল বসেছে, যেখানে চিঠিবাক্স, রঞ্জনসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় আয়োজন দেখা গেছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের সামনে বটতলায় এই উৎসব শুরু হয়। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) উৎসব পরিদর্শনে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব এম নসরুল্লাহ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।
উৎসবে জ্ঞানতাপসী, দিশারী বুক হাউজ, আরশীনগর, আপ্যায়ন, পাটের ঝুড়ি, গয়নার বাক্স, চন্দ্রমাধুরী, সাজপসরা, রসনার স্টেশন, পিঠা যাবে পেটুক বাড়ি, স্টাইল ক্যানভাস, কুটুম বাড়ি, বুক ভিলেজসহ বিভিন্ন স্টল অংশ নেয়। শিক্ষার্থীরা এসব স্টল থেকে তাদের পছন্দের খাবার, পোশাক ও বই কেনেন এবং গ্রামীণ ঐতিহ্যের স্বাদ উপভোগ করেন।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তামিম মীর বলেন, “আমি এবারই প্রথম কুহেলিকা উৎসবে এসেছি এবং দারুণ উপভোগ করছি। এ ধরনের আয়োজন আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
অভয়ারণ্যের সদস্য অভয় মাহমুদা আক্তার বলেন, “এই উৎসবের অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ ছিল চিঠিবাক্স। বর্তমানে আমরা ভার্চুয়াল জগতে বেশি অভ্যস্ত হয়ে গেছি, ফলে চিঠি আদান-প্রদান প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই আমরা চিঠিবাক্সের মাধ্যমে সেই পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি। কেউ চাইলে গোপনীয়তা রক্ষা করেই তার প্রিয়জনের কাছে চিঠি পাঠাতে পারে এবং আমরা সেই চিঠি নির্ভুলভাবে পৌঁছে দেব।”
আরও পড়ুনঃ আমতলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
অভয়ারণ্যের সভাপতি নাঈমুল ফারাবি বলেন, “কুহেলিকা উৎসব কেবল বিনোদনের জন্য নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা গঠনে সহায়তা করে। এখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিভা ও দক্ষতা তুলে ধরতে পারে, যা তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।”
উৎসব পরিদর্শন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব এম নসরুল্লাহ বলেন, “অভয়ারণ্যের এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংস্কৃতিচর্চার নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে। শীতবরণের এই আয়োজনে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও উদ্যোক্তাদের সৃজনশীল উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এটি আমাদের শিকড়কে নতুনভাবে চেনার সুযোগ তৈরি করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
কুহেলিকা উৎসব তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার পথে অনুপ্রাণিত করবে এবং বাংলার ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখবে বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেছেন।