ডালিয়া হালদার, ববি প্রতিনিধিঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের বিরুদ্ধে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে তার বাসভবন ও কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
এর আগে, বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর নিচতলায় বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা এ কর্মসূচিতে ছয়টি অভিযোগ তুলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানান তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নিয়মবহির্ভূতভাবে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট রেজিস্ট্রারকে বহাল রাখা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের আগাম জামিন নিশ্চিত করা। নিয়মবহির্ভূতভাবে দুজন সিন্ডিকেট সদস্য বাদ দিয়ে আওয়ামীপন্থী ব্যক্তিদের নিয়ে গোপন সিন্ডিকেট বৈঠক আয়োজন। আইন ও সংবিধানের দোহাই দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করা। শিক্ষার্থীদের ২২ দফা দাবির প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হওয়া। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদক সেবন ও ভাঙচুর বন্ধে প্রশাসনের ব্যর্থতা।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, "উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে ব্যস্ত। তিনি গোপনে সিন্ডিকেট বৈঠক ডেকে আওয়ামীপন্থীদের রক্ষা করছেন। আমরা তার পদত্যাগ চাই।"
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, "উপাচার্য একের পর এক স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষ হলেও তাকে বহাল রাখা হয়েছে। আমরা আর সুযোগ দিতে চাই না, উপাচার্যকে পদত্যাগ করতেই হবে।"
আরও পড়ুনঃ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির সমাবেশ
একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, "ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসন হচ্ছে কি না, তা বলা কঠিন। তবে উপাচার্যের বিরুদ্ধে একেক সময়ে একেক পক্ষ আন্দোলন করছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করছে।"
গত বছরের ২৭ নভেম্বর উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা পদত্যাগের দাবি জানান। পরদিন তার কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। পরে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও সমাধান আসেনি। সর্বশেষ শিক্ষার্থীরা ২২ দফা দাবি দিয়ে সময়সীমা বেঁধে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য না করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।