spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসবরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নের ঘোষণায় সীমাবদ্ধ, কার্যকর অগ্রগতি নেই

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নের ঘোষণায় সীমাবদ্ধ, কার্যকর অগ্রগতি নেই

ডালিয়া হালদার, ববি প্রতিনিধিঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) দীর্ঘদিন ধরে অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবে তা দৃশ্যমান হয়নি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, পাঠদান কক্ষের সংকট, শিক্ষক-সংকট এবং সেশনজটসহ নানা সমস্যার সমাধানে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া এবং বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিন—তিনজনই সংকট নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়ন হয়নি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও পরিকল্পনা দপ্তর জানায়, প্রতিষ্ঠার পর প্রথম পর্যায়ের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে, যেখানে দুটি একাডেমিক ভবন, দুটি প্রশাসনিক ভবন, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, কেন্দ্রীয় মসজিদ ও চারটি হল নির্মাণ করা হয়েছে। তবে এটি ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য যথেষ্ট নয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সাবেক দুই উপাচার্য উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫টি বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পাঠদান কক্ষ না থাকায় সেশনজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। অনেক বিভাগে বছরে দুটি সেমিস্টার হওয়ার কথা থাকলেও মাত্র একটি শেষ করা সম্ভব হয়। বিশেষ করে ইংরেজি, রসায়ন, সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, লোকপ্রশাসন, উপকূলীয় অধ্যয়ন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলসহ বিভিন্ন বিভাগ সেশনজটের সমস্যায় জর্জরিত।

শিক্ষক সংকটও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রধান সমস্যা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪৯৩ জন শিক্ষকের প্রয়োজন থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ২১০ জন, এবং শিক্ষাছুটিতে আছেন ৫৪ জন। ফলে পাঠদান কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। ২০২৪ সালের মার্চ ও জুন মাসে ৫২ জন শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা থাকলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

পরিকল্পনা দপ্তর জানায়, দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের আওতায় ২৬টি ভবনসহ ৩৩টি স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, তবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।

আরও পড়ুনঃ রাজশাহী কলেজে ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ, ক্ষোভ শিক্ষার্থীদের

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, “অবকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরি হলেও তা সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময় লাগবে। তবে সংকট নিরসনে একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং অন্তত ৫০ কোটি টাকার বাজেট আনার পরিকল্পনা রয়েছে।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিন জানান, “ক্লাসরুম ও শিক্ষক সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ৩ কোটি ৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব মন্ত্রণয়ে পাঠানো হয়েছে। সাম্প্রতিক প্রতিকূলতার কারণে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি, তবে এটি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।”

শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রতিবারই সংকট নিরসনের আশ্বাস দেওয়া হলেও কার্যকর কোনো পরিবর্তন দেখা যায় না। তারা দ্রুত অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষক নিয়োগ ও সেশনজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।