তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শেখ পরিবারের নামে থাকা বিভিন্ন আবাসিক হল ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে স্বাধীনতা বিরোধী শাহ আজিজুর রহমানের নামে নামকরণের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ এক বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটি শাহ আজিজুর রহমানের পরিবর্তে মাওলানা ভাসানীর নামে হলের নামকরণের আহ্বান জানিয়েছে।
প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে 'জুলাই-৩৬', শেখ রাসেল হলের নাম 'শহীদ আনাছ হল', বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম 'শাহ আজিজুর রহমান হল', বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নাম 'উম্মুল মু'মিনীন আয়েশা সিদ্দিকা হল' এবং ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের নাম 'ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবন' রাখা হয়েছে।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। শিক্ষার্থী ইশতিয়াক ফেরদৌস ইমন মন্তব্য করেন, "ঠিক কী কারণে এই নামকরণ করা হলো, তা জানা নেই। এমন অনেক মানুষের নাম আসতে পারতো যারা মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।"
আরেক শিক্ষার্থী আশহাদুল ইসলাম বলেন, "ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় শাহ আজিজুর রহমানের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।"
আরও পড়ুনঃ ইবিতে নতুন রেজিস্ট্রার ও পরিকল্পনা পরিচালক নিয়োগ
তবে ছাত্র ইউনিয়ন বিবৃতিতে বলেছে, "শাহ আজিজুর রহমান একজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন। তার নামে আবাসিক হলের নামকরণ জাতির জন্য এক কলঙ্কজনক সিদ্ধান্ত। আমরা এই সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং মাওলানা ভাসানীর নামে হলের নামকরণের দাবি জানাই।"
এ বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, "ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনালগ্নে শাহ আজিজুর রহমানের ভূমিকা ছিল। মানুষ নিন্দা জানাতে পারে, কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তার অবদান আছে। এটি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত, এখানে কারও ব্যক্তিগত মতামত প্রাসঙ্গিক নয়।"
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শাহ আজিজুর রহমান মিলনায়তন নামে একটি স্থাপনা নির্মিত হয়। পরে ২০১২ সালে মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবিরের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট নাম পরিবর্তনের আদেশ দেয় এবং ওই বছরের ১৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে নাম পরিবর্তন করে 'বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তন' রাখা হয়।