তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কমিটির সভায় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করায় শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। আন্দোলনের মুখে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সভাস্থল থেকে বের করে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের তৃতীয় তলায় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কমিটির মিটিং শুরু হয়। মিটিংয়ে বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় সভাপতির দায়িত্বে থাকা আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরাও অংশগ্রহণ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা সভাস্থলে জড়ো হয়ে আওয়ামীবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সভা থেকে বের করে দেয়।
পরে শিক্ষকরা ভ্যানে করে নিজ নিজ বিভাগে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা তাদেরকে পেছন থেকে ‘দালাল ধর, দোসর ধর’ বলে ধাওয়া দেন। এরপর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগে গিয়ে বিভাগটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলামকে আগামীকাল থেকে ক্যাম্পাসে না আসার হুঁশিয়ারি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে গত বছরের ৪ আগস্ট আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরামের আন্দোলনবিরোধী মিছিলে অংশ নেন। এছাড়া আন্দোলনের পর বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জুলাই আন্দোলনকে নিয়ে উপহাস করে পোস্ট দেন। এমনকি প্রতিনিয়ত শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট করে আসছেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক তানভীর মণ্ডল বলেন, "বিগত আওয়ামী শাসনামলে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা জিয়া পরিষদের ও গ্রীন ফোরামের শিক্ষকদের গায়ে হাত তোলাসহ বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেছে। কিন্তু আমরা জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী আওয়ামী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন কোনো কাজ করতে চাই না। আমরা চাই, তারা তাদের ভুল স্বীকার করে অনুশোচনা করে ফিরে আসুক। তারা তাদের রুটিন কাজগুলো করুক। কিন্তু যদি তারা এখনো তাদের পূর্বের রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণা লালন করেন, তাহলে আমরা কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবো।"
আরও পড়ুনঃ আমাদের লড়াই হাসিনার বিরুদ্ধে নয়, লড়াই ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে: শিবির সভাপতি
এ বিষয়ে জানতে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শহিদুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, "মিটিংয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা আপত্তি জানান। পরে তাদের শান্তিপূর্ণভাবে সভা থেকে বের করে নিয়ে আসা হয়।"
শহিদুল ইসলামের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, "শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার পর আমরা তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন যে ডরমিটরিতে গিয়ে বিশ্রাম নেবেন। পরে আমরা তাকে নিরাপদে সেখানে পৌঁছে দিয়েছি।"