তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিজড়িত শেখ জামে মসজিদ নিয়ে গবেষণা শুরু করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক ড. শেখ এ বি এম জাকির হোসেন। আওয়ামী প্রশাসনের আনুকূল্য পাওয়ার জন্য তিনি এই গবেষণার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পট পরিবর্তনের পর গবেষণা প্রকল্পটি বাতিলের আবেদন করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
অধ্যাপক জাকির হোসেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জিয়া পরিষদের সদস্য। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট ও প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গবেষণা তহবিল থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য অনুমোদিত ৮০টি গবেষণা প্রকল্পের মধ্যে তার গবেষণাটিও ছিল। "নীলফামারীতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিজড়িত শেখ জামে মসজিদ: ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ" শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের জন্য তিনি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পান। গবেষণার প্রস্তাবনায় তিনি বঙ্গবন্ধুকে ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি’, ‘প্রকৃত ধর্মভীরু’ এবং ‘মসজিদ-মাদরাসার প্রতি অনুরাগী ব্যক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
গবেষণা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় যখন বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করেন। তাদের অভিযোগ, তিনি আওয়ামী প্রশাসনের আনুকূল্য পাওয়ার জন্য এই গবেষণা শুরু করেন এবং নিজেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য পরিচয় দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং প্রভোস্ট হিসেবে ছাত্রলীগ নেতাদের বিশেষ সুবিধা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তবে আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে এসে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে মাঠে আসেন তিনি এবং ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর গবেষণা প্রকল্প বাতিলের আবেদন করেন। অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, "বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিজড়িত স্থান নিয়ে গবেষণার বিষয়টি বিতর্ক সৃষ্টি করায় ৫ আগস্টের পর আমি প্রকল্পটি বাতিলের আবেদন করেছি। যেহেতু এটি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত, সেহেতু এ নিয়ে গবেষণা করা যাবে না।"
আরও পড়ুনঃ দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ও রোডম্যাপ প্রকাশ করা প্রয়োজনঃ গোলাম পরওয়ার
তবে গবেষণা প্রকল্প মূল্যায়ন ও মনিটরিং কমিটির সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম জানিয়েছেন, গবেষণা প্রকল্প বাতিলের বিষয়ে তিনি অবগত নন।
জিয়া পরিষদের একাধিক সদস্য বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সংগঠনটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরুন নাহার বলেন, "এ বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে কোনো আলোচনা হয়নি। মুখোশধারী মানুষদের নিয়ে মন্তব্য করতে ইচ্ছে নেই।"
জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান বলেন, "গবেষণার বিষয়ে আমি অবগত নই। বিস্তারিত জানার পর মতামত দিতে পারবো।"