তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দাখিল করা চার্জশিটের ওপর শুনানি শেষে সিনিয়র স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) শেখ নাজমুল আলম এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম।
মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুর রউফ।
অবৈধভাবে নিয়োগ প্রদান ও সরকারি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদক যশোরের তৎকালীন উপ-পরিচালক আল আমিন। মামলার তদন্ত শেষে তাদের অভিযুক্ত করে সম্প্রতি আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে আবেদন করেন আব্দুর রউফ। নিয়োগের জন্য গঠিত তিন সদস্যের বাছাই বোর্ডে সদস্য হিসেবে ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন এবং সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার।
একই বছরের ২২ আগস্ট অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষায় আরও তিনজন প্রার্থী অংশ নিলেও কাউকে পাস করানো হয়নি। অথচ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও আব্দুর রউফকে প্রথমে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে অভিজ্ঞতার ঘাটতির কারণে তাকে সেকশন অফিসার (গ্রেড-১, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।
আরও পড়ুনঃ রাজশাহী কলেজের কর্মচারীদের মাঝে ছাত্রশিবিরের ঈদ উপহার বিতরণ
রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে সাবেক উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তাকে সেকশন অফিসার হিসেবে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এই অবৈধ নিয়োগের ফলে ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত তিনি বেতন-ভাতা বাবদ ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা উত্তোলন করেন, যা আত্মসাতের শামিল বলে দুদকের অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রেক্ষিতে আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
উল্লেখ্য, ড. কামাল উদ্দিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য থাকাকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতাদের নিম্ন পদে আবেদন করে উচ্চ পদে নিয়োগ, বয়সের শর্ত শিথিল করে কর্মকর্তা নিয়োগ এবং ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।