বেরোবি প্রতিনিধি: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) অনুষ্ঠিত কৃষি গুচ্ছ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আয়োজিত ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষকদের রিজার্ভ ডিউটির উপস্থিতি পত্রে মুজিব শতবর্ষের লোগো ও বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে কবি হেয়াত মাহমুদ ভবনে কয়েকজন শিক্ষকের উপস্থিতি পত্রে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর লোগো দেখা যায়। তালিকায় নাম থাকা আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন ও নীল দলের প্রতিষ্ঠাতা ড. আপেল মাহমুদের নাম সামনে আসতেই বিষয়টি শিক্ষকদের নজরে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে অন্যান্য ভবনের তালিকাগুলোও একই কারণে প্রত্যাহার করা হয়।
তবে ভোরবেলার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ভর্তি পরীক্ষাতেও একই ধরনের লোগোযুক্ত উপস্থিতি পত্র বিতরণ হয় এবং শিক্ষকরা তাতে স্বাক্ষরও করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিএনপি ঘরানার শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তারা দ্রুত এসব উপস্থিতি পত্র বাতিলের দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরীফ উদ্দিন তালিকাটি প্রস্তুত করেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, মূল তালিকায় লোগো ছিল না, এটি পুরোনো ফরম্যাট থেকে ভুলবশত ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে।
এদিকে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের একজন ড. আপেল মাহমুদ বলেন, “আমার দায়িত্ব ছিল মূলত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় টিমের সঙ্গে সমন্বয় ও ভিজিটের বিষয়গুলো দেখা। উপস্থিতি পত্রের প্রস্তুতির সঙ্গে আমার প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা নেই।”
এই বিতর্ককে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী শামসুর রহমান সুমন বলেন, “ফ্যাসিবাদী প্রতীক ও ভাবধারার এমন ব্যবহার চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি চ্যালেঞ্জ। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে হবে।”
আরও পড়ুনঃ ইবিতে এক কার্ডেই মিলবে সব সেবা
এ প্রসঙ্গে ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, “আমরা বারবার প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। আওয়ামীপন্থিদের একের পর এক সুবিধা প্রদান এ সন্দেহকে আরও জোরালো করে তুলছে। আমরা দলীয়ভাবে এ বিষয়ে স্মারকলিপি দেব।”
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী জানান, “আমি বিষয়টি সম্পর্কে শুনেছি এবং ইতিমধ্যেই খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ শুরু করেছি।”
ঘটনাটি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং এ নিয়ে প্রশাসনের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জোরালো হচ্ছে।