
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের নাম পরিবর্তন ও সেশনজট নিরসনের দাবিতে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে আন্দোলনে নামে বিভাগের একাংশ শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে, বিভাগের নাম অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে একই সময়ে প্রশাসনের অন্য অংশে অবস্থান নেন বিভাগের আরেকাংশ শিক্ষার্থী। তবে শিক্ষকরা তাদের বোঝালে তারা অবস্থান ত্যাগ করেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবিতে তারা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছেন। নিয়ম মেনে আবেদন প্রেরণ ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিলেও এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি উত্থাপিত হলে উপাচার্য একটি এক্সপার্ট কমিটি গঠন করলেও সেই কমিটির কোনো রিপোর্ট কিংবা সিদ্ধান্ত এখনো জানানো হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তাদের দাবি, এক্সপার্ট কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ এবং নাম পরিবর্তনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়া তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না।
তারা বলেন, “আমরা বিভাগের নাম ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ করার দাবি জানিয়ে আসছি। প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রিতা এবং প্রতিশ্রুতির নামে প্রহসনের প্রতিবাদেই আমরা প্রশাসন ভবনে তালা দিয়েছি।”
একইসঙ্গে, পরীক্ষা কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা বলেন, “দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করতে চাইলেও পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা একমত নন। তাই অবিলম্বে বর্তমান কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানাই।”
অন্যদিকে, বিভাগের বর্তমান নাম “জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট” বহাল রাখার পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, পূর্বে বিভাগের নাম ছিল “এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি”। পরে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নাম পরিবর্তন করা হয়। তাদের দাবি, “চাকরির ক্ষেত্রে জিওগ্রাফির গুরুত্ব বেশি এবং এটি মূল বিষয় হওয়ায় আমরা এটি হারাতে চাই না। তাই বর্তমান নামই যথাযথ।”
আরও পড়ুনঃ নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবি ইবির সিপিআর’র
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের কথা শুনেছি। এ বিষয়ে গঠিত কমিটি আগামী মাসের ২০ তারিখের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই সিন্ডিকেট সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, এর আগেও একাধিকবার একই দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। পাল্টা দাবিতে বিভাগের অন্য অংশের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে অংশ নেন, ফলে বিষয়টি নিয়ে বিভাগের ভেতরেই মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।