মো: আলিফ হোসাইন, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)–এ চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার(২৩ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে এটি গিয়ে শেষ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেটের সামনে আয়োজিত সমাবেশে।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা কুয়েটের চলমান আন্দোলনকে ‘ন্যায়সঙ্গত’ ও ‘সময়োপযোগী’ আখ্যায়িত করে বলেন, “যেখানে শিক্ষার্থীদের কথা গুরুত্ব পাচ্ছে না, সেখানে ঐক্যই হলো আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।” তারা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের এক দফা আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান।
বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, “একজন উপাচার্যের প্রধান দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও একটি সুষ্ঠু শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কিন্তু কুয়েটের বর্তমান পরিস্থিতি স্পষ্ট করছে যে, প্রশাসন সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ।” তারা অনশনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক ঝুঁকি ও প্রশাসনের নীরবতাকে ‘নিন্দনীয়’ বলেও মন্তব্য করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা কুয়েটের আন্দোলনকারী ছাত্রদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়ে সরকারের প্রতি দ্রুত এই সংকটের সমাধান নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে কুয়েট ক্যাম্পাস। ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। তবে বর্তমানে তাদের একমাত্র দাবি—উপাচার্যের পদত্যাগ।
এই দাবিতে শিক্ষার্থীরা শুরু করেছেন আমরণ অনশন। এতে অংশ নেওয়া চারজন শিক্ষার্থী গতকাল অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং বাকি দুইজনকে অভিভাবকরা বাড়িতে নিয়ে গেছেন। প্রচণ্ড গরমে (অনুভূত তাপমাত্রা প্রায় ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অনশনকারীরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুনঃ সখীপুরে সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ
এ পরিস্থিতিতে শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনালাপে কথা বলেন ও অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। তিনি জানান, “সরকার শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে অবগত রয়েছে এবং একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল দ্রুত কুয়েটে গিয়ে বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।”
এর মধ্যেই শিক্ষার্থীরা কয়েক দফায় পাঁচটি আবাসিক হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেছেন এবং উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।