
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রীবৃন্দ।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের সামনে ‘সাধারণ ছাত্রীবৃন্দ’ ব্যানারে শতাধিক শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, কমিশনের সুপারিশে যৌন পেশাকে সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব নারীদের জন্য চরম অবমাননাকর ও অগ্রহণযোগ্য। এই ধরনের সুপারিশ নারীদের মর্যাদাহানিকর ও মূল্যবোধবিরোধী। শিক্ষার্থীদের ভাষ্যে, “ইসলামে নারীদের অধিকার কখনোই খর্ব করা হয়নি, বরং আরও সম্মানিত করা হয়েছে। শাহজালালের পূণ্যভূমি থেকে আমরা কখনোই এই ধরনের অযৌক্তিক সুপারিশ বাস্তবায়ন হতে দেব না।”
আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা অধ্যাপক ড. খোন্দকার আরিফা আক্তার বলেন, “এই কমিশনে যারা রয়েছেন, তাদের অনেকেই পশ্চিমা প্রভাবিত এনজিওকেন্দ্রিক চিন্তার ধারক। এরা বৃহত্তর নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাই নতুনভাবে প্রতিনিধিত্বশীল নারীদের নিয়ে একটি সংস্কার কমিশন গঠন করে তারপর সুপারিশ প্রণয়ন করা উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “কমিশনের বেশ কয়েকটি সুপারিশ কোরআন ও হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং একই সঙ্গে দেশের সব ধর্মের মূল্যবোধকে অপমান করে। বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ ইতোমধ্যে একবাক্যে এসব সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছে।” শিক্ষার্থীরা এই কমিশন ভেঙে দিয়ে নতুন একটি গঠন ও অবিলম্বে সুপারিশ প্রত্যাহারের দাবি জানান।
আরও পড়ুনঃ মাভাবিপ্রবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি, বিক্ষোভ ও সমাবেশ
উল্লেখ্য, গত ১৮ নভেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে। এ কমিশনের প্রধান করা হয় বেসরকারি সংস্থা ‘নারীপক্ষ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভীন হককে। কমিশন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৪৩৩টি সুপারিশ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিতকরণ, সন্তানের ওপর নারীর সমান অভিভাবকত্ব, সংসদে নারী সংরক্ষিত আসন বাড়িয়ে ৩০০ করা, এবং যৌনকর্মীদের শ্রম অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিতের মতো বিষয়।
এই সুপারিশগুলোকেই কেন্দ্র করে বর্তমানে সারাদেশে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন তারই অংশ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।