
মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসে আবারও ল্যাপটপ চুরির ঘটনা ঘটেছে। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে একই ভবনে পুনরায় এমন চুরির ঘটনায় ছাত্রাবাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে। তারা অভিযোগ করেছেন, বারবার চুরি হলেও প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যা প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই তুলে ধরে।
রবিবার (৪ মে) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কলেজ ছাত্রাবাসের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ভবনের সি-ব্লকে এই চুরির ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, এক অজ্ঞাত বহিরাগত ওই সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কক্ষে ঢুকে ল্যাপটপ নিয়ে চলে যায়।
চুরি হওয়া ল্যাপটপের মালিক মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ রায়হান সরকার। তিনি জানান, প্রতিদিনের মতো ল্যাপটপ যথাস্থানে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন ল্যাপটপটি নেই। পরে বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষকে জানালে সিসিটিভি ফুটেজে চুরির দৃশ্য ধরা পড়ে।
রায়হান অভিযোগ করেন, “গেটম্যানরা গভীর রাতে ডিউটি ফেলে বাসায় চলে যান। ফলে ভোর পর্যন্ত গেট ফাঁকা থাকে। এর আগেও একইভাবে চুরির ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” তিনি তার ল্যাপটপ উদ্ধারে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ এবং ছাত্রাবাসে নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানান।
রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ (আবির) বলেন, “প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে, অথচ প্রশাসনের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। ল্যাপটপ, টাকা, মোবাইল চুরি এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। গরীব পরিবারের ছেলেরা অনলাইন থেকে ইনকাম করে চলার চেষ্টা করে, আর তাদের জিনিস বারবার চুরি হয়ে গেলে দায় কে নেবে? প্রশাসন নাকি শিক্ষার্থীরা?”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “প্রয়োজনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলনে নামতে হবে, যদি এবারও প্রশাসন নীরব থাকে।”
ছাত্রশিবিরের রাজশাহী কলেজ শাখার সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন জানান, তিনি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এবং দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
আরও পড়ুনঃ হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ
অন্যদিকে ছাত্রাবাসের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক আবু জাফর মোঃ মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, “আমরা গেট বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিলেও ছাত্ররা মানতে চায় না। আগে চুরি হওয়ায় সি-ব্লকের বারান্দার গেটে তালা লাগানো হয়েছিল, কিন্তু শিক্ষার্থীরাই পরে সেগুলো খোলা রাখতে শুরু করে। এর ফলেই চুরি হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর একই ভবনের আরেক শিক্ষার্থী আবু রায়হানের ল্যাপটপ চুরি হয়েছিল, কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও সে ঘটনার কোনো কার্যকর অগ্রগতি হয়নি।
ছাত্রাবাসে চুরি বাড়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ও অসন্তোষ বাড়ছে, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির একটি স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। শিক্ষার্থীরা এখন দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন।