spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসরাজশাহী কলেজে স্ক্রলিং বোর্ডে ছাত্রলীগকে ঘিরে হুমকি বার্তা: সাত মাসেও নিশ্চুপ প্রশাসন

রাজশাহী কলেজে স্ক্রলিং বোর্ডে ছাত্রলীগকে ঘিরে হুমকি বার্তা: সাত মাসেও নিশ্চুপ প্রশাসন

মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ রাজশাহী কলেজের প্রশাসনিক ভবনের ডিজিটাল স্ক্রলিং বোর্ডে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আবারও আসবে ভয়ংকর রূপে, সাবধান’—এই বার্তা প্রদর্শনের ঘটনার প্রায় সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো জড়িতদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি কলেজ প্রশাসন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর বিকেলে স্ক্রলিং বোর্ডে হঠাৎ এই বার্তা ভেসে উঠলে তা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং সারাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

ঘটনার পরপরই কলেজ প্রশাসন জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে তদন্তের আশ্বাস দিলেও এ পর্যন্ত তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দোষী ব্যক্তির পরিচয়, ঘটনার কারণ কিংবা ভবিষ্যৎ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা—কোনো বিষয়েই আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

ঘটনার সময় আইটি ইনচার্জ দাবি করেছিলেন, তিনি বিকেল ৫টার দিকে অফিসের কম্পিউটার বন্ধ করে চলে যান এবং ধারণা করেন, কারও হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বার্তাটি স্ক্রলে প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থার এই দুর্বলতা কীভাবে সম্ভব হলো?

শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলছেন, দীর্ঘ সময়েও দোষী শনাক্ত না হওয়ায় ভবিষ্যতে বড় কোনো ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির জানান, “ঘটনার পরপরই আমরা অভিযুক্তকে শনাক্ত করে কলেজ প্রশাসনকে জানাই। তারা আমাদের সহযোগিতার প্রশংসা করলেও পরবর্তী কার্যক্রমে আর কিছুই চোখে পড়েনি।”

ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী কলেজ শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান মাসুম বলেন, “এই ঘটনায় ফ্যাসিবাদী সরকারের ভয়ের রাজনীতি প্রতিফলিত হয়েছে। আমরা প্রশাসনকে সহায়তা করলেও তারা কিছুই করেনি। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।”

আরও পড়ুনঃ নবীনদের বরণ করলো রাজশাহী কলেজ জব প্রিপারেশন ক্লাব

তদন্ত কমিটির তৎকালীন প্রধান ড. মোঃ আব্দুল মতিন বলেন, “আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি, রিপোর্ট ও সুপারিশমালা প্রিন্সিপালের কাছে জমা দিয়েছি। পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া তারই কাজ।”

এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী বলেন, “যে ব্যক্তি এই ঘটনা ঘটিয়েছিল, তাকে সনাক্ত করা হয়েছিল এবং প্রশাসনকে জানানোও হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে নানা ব্যস্ততার কারণে আর সে বিষয়ে খোঁজ রাখা হয়নি। বর্তমানে প্রশাসনই বিস্তারিত বলতে পারবে।”

প্রশাসনের দীর্ঘ নীরবতা ও তদন্তে অগ্রগতির অভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন উঠেছে—এটি কি নিছক প্রশাসনিক গাফিলতি, নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনা এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল?